শিরোনাম
রেইনট্রি ধর্ষণ মামলার রায়ে সমগ্র নারী জাতিকে অপমান করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রেইনট্রি ধর্ষণ মামলায় রায়ের ওপর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শুক্রবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলার রায় হয়েছে। সেখানে দুইজন শিক্ষার্থী রেইপড হয়েছিল, সেটার মামলা হয়েছে। মামলার বিষয়ে আমরা গণমাধ্যমে যেটুকু দেখছি, ঘটনা ঘটেছে সেটি স্বীকার করা হচ্ছে, আদালতেও স্বীকার করছে। কিন্তু রায় হচ্ছে কী? বেকসুর খালাস।’
‘কেনো? কারণটা কী? কারণটা হচ্ছে যে, যারা যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, যাদেরকে একুইজড করা হয়েছে, দে আর সো পাওয়ারফুল। তাদের এত টাকা! জুয়েলারি, এমপি এই সমস্ত। যার ফলে কী হয়েছে? আজকে সমস্ত নারী জাতিকে অপমান করে এদেরকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি, হতাশ হয়েছি, ক্ষুব্ধ হয়েছি। এ ধরনের রায় আমরা মেনে নিতে পারি না।’
বৃহস্পতিবার ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বনানীর রেইনট্রি হোটেলে চার বছর আগে দুই তরুণীকে ধষর্ণের আলোচিত মামলার রায়ে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির সবাইকে খালাস দেয়। ওই রায়ে বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার পুলিশের উদ্দেশে বলেছেন, ধর্ষণের ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নিতে।
ঢাকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ২০১৭ সালের ৬ মে বনানী থানায় গিয়ে একটি মামলা করেন। তাতে তিনি অভিযোগ করেন, এক মাসের বেশি সময় আগে ২৮ মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের এক অনুষ্ঠানে ডেকে নিয়ে তাকে এবং আরেক তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। ওই তরুণীর মামলার প্রধান আসামি ছিলেন আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ। এ ছাড়া সাফাতের দুই বন্ধু ও দেহরক্ষী এবং গাড়িচালককেও আসামি করা হয়।
বিচার ব্যবস্থা দলীয়করণের শিকার মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি গতকালও বলেছিলাম যে, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে পুরোপুরি দলীয়করণ করে ফেলা হয়েছে। এস কে সিনহাকে (সাবেক প্রধান বিচারপতি) বন্দুক দেখিয়ে দেশ থেকে বের করে দিলেন। কী কারণে? উনি একটা রায় দিয়েছিলেন বিচারক নিয়োগ করবার যে ব্যবস্থা ছিল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কমিশন গঠন, বিচারকদের অভিসংশনের ব্যাপারে।’
‘সেটা সরকার মেনে নিতে পারেনি। তারপর কী হলো? তাকে একেবারে বন্দুক ঠেকিয়ে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হলো। আমরা তো দেখেছি এগুলো, নামও জানি আমরা। তারমধ্যে একজন চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে, ল’ সেক্রেটারিও ছিলেন সেটার মধ্যে।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার উদ্যোগে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ‘দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
জাগপার সভাপতি খন্দকার লুতফুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহাদাতের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, ইসলামিক পার্টি আবুল কাশেম জাগপার আওলাদ হোসেন শিল্পী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।