শিরোনাম
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেশ কিছু সংগঠন, বেশ কিছু গোষ্ঠী যারা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে— ‘এই অন্তর্বর্তী সরকারকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাখা হোক।’ তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) একেবারে পরিবর্তন করে দেবে, সব সংস্কার তারাই করে দেবে। তাহলে তো জনগণের দরকার নেই, পার্লামেন্টের দরকার নেই।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে জেএসডি আয়োজিত ‘দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট: উচ্চকক্ষের গঠন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা পত্রিকায় খবর দিয়েছে একটা জরিপের বরাত দিয়ে। এই জরিপ কারা দিয়েছে— আমরা বলতে পারবো না। নাম দিয়েছে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট। আমি জানি না, তারা কীভাবে জরিপটা করেছে। তারা বলেছে— ৮০ পার্সেন্ট লোক চায় যতদিন খুশি এই সরকার থাকুক। আমি জানি না, তারা এই কথা কোথা থেকে পেলো। জনগণ এটা কোনোদিনই মেনে নেবে না। এই ধরনের কথা, এই ধরনের রিপোর্ট করা থেকে... আমার মনে হয়, ভেবেচিন্তে করা উচিত। এটা যেন বিভ্রান্তির সৃষ্টি না হয়।’
সমাজের বিজ্ঞ লোকেরাও এখন বিভ্রান্তিকর কথা বলছেন জানিয়ে তিনি বলেন,‘ আমি অবাক হই যখন দেখি, আমাদের অত্যন্ত শিক্ষিত মানুষেরা, সমাজে যাদের গুরুত্ব আছে— তারা এখন বিভিন্ন রকম কথা বলেন, যা অত্যন্ত বিভ্রান্তিমূলক। যারা দ্বায়িত্ব পেয়েছেন এই সরকারের, তাদের মধ্যে যখন অনেকে বলেন— নতুন দল তৈরি করতে হবে। তখন বিস্মিত না হয়ে পারা যায় না। এই এখতিয়ার ওনাকে কে দিয়েছে। উনি এই দ্বায়িত্ব পেলেন কোথায় যে বলবেন, নতুন দল করতে হবে। তাহলে আমরা… জনগণ কীভাবে ভাববে যে, এরা নিরেপক্ষভাবে কাজ করছে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে আপাতত রাষ্ট্র পরিচালনা এবং নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমার দল যেটা বিশ্বাস করে— (রাষ্ট্রে) মৌলিক যে পরিবর্তন আনতে হবে, সেগুলো জনগণের মতামত ছাড়া সম্ভব নয়। তার জন্য একমাত্র জায়গা হচ্ছে পার্লামেন্ট। সুতরাং, এর জন্য সত্যিকার অর্থে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে। সেই নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হবেন, তারা সিদ্ধান্ত নেবেন কোন পরিবর্তনগুলো হওয়া দরকার। শুধু পরিবর্তনই করতে হবে, নাকি নতুন করে লিখতে হবে, নাকি একেবারে বাতিল করে নতুন সংবিধান আনতে হবে— সেটা পার্লামেন্টই সিদ্ধান্ত নেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে বার্তা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখনও আপনাদের প্রশাসনে সেই সব ব্যক্তিরা রয়ে গেছেন, যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য মদদ দিয়ে গেছেন, তাদেরকে এখনও সেসব জায়গা থেকে অপসারণ করা হয়নি। আমি আহ্বান জানাবো, দ্রুত তাদের চিহ্নিত করে আপনাদের যেই জায়গা থেকে পলিসিগুলো হয়— সেখান থেকে সরিয়ে দিয়ে এমন একটি কাঠামো তৈরি করেন, যেখানে একটি নিরেপক্ষ নির্বাচন হতে পারে।’
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারা মারা গিয়েছে, তারা কি কেবল নির্বাচনের জন্যই জীবন দিয়েছে? নির্বাচন দরকার আছে। কিন্তু সংস্কার ছাড়া এই নির্বাচন দিয়ে কোনও লাভ হবে না।’
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা।