শিরোনাম
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের মধ্যে ঢাকা কলেজের সামনে নিহত যুবকের পরিচয় মিলেছে।
২৫ বছর বয়সী ওই যুবকের নাম সবুজ আলী, তিনি নীলফামারীর সদর উপজেলার বাদশা মিয়ার ছেলে। ঢাকা কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের ১৮/১৯ সেশনের ছাত্র ছিলেন সবুজ; থাকতেন কলেজের নর্থ হলে।
নিউ মার্কেট থানার এসআই মাহাবুব আলী জানান, মঙ্গলবার মধ্যরাতে সিআইডির একটি দল মরদেহের আঙুলের ছাপ ডেটাবেজের সঙ্গে মিলিয়ে সবুজের পরিচয় শনাক্ত করে।
সবুজ ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন জানিয়ে ফেইসবুকে শোক প্রকাশ করেছেন ডাক ও টেলি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। সেখানে তিনি লিখেছেন, “সন্ত্রাসীদের হাতে খুন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী মো. সবুজ আলী।”
বুধবার ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক শোকবার্তায় বলা হয়, “বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী হামলায় ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মী মো. সবুজ আলী মারা গেছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পরিবার তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে।”
অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে ওই বার্তায় বলা হয়, “বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের দেশব্যাপী তাণ্ডবের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।”
চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের অদূরে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এতে মিরপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুরের পর থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। বিকাল ৪টার দিকে সংঘর্ষ ঢাকা কলেজ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
সে সময় ঢাকা কলেজের সামনের রাস্তায় হেলমেট পরা এক যুবককে রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পাশেই লাঠি হাতে ছিলেন আরেক ব্যক্তি।
আহত ওই যুকককে বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান। রাতে তাকেই সবুজ আলী হিসেবে শনাক্ত করেন সিআইডির বিশেষজ্ঞরা।
সংঘর্ষের মধ্যে ঢাকা কলেজের অদূরে মিরপুর সড়কে সিটি কলেজের সামনে রাস্তায় পড়ে ছিলেন আরেক যুবক। সন্ধ্যা ৭টার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া তখন জানান, সিটি কলেজের সামনে থেকে নেওয়া ওই যুবকের মাথায় গুরুতর জখম ছিল। পরে তাকে নিউ মার্কেটের হকার শাহজাহান বলে শনাক্ত করেন তার স্বজনরা।
শাহজাহান কী করে ওই সংঘর্ষের মধ্যে গেলেন তা স্পষ্ট নয়। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি থাকতেন কামরাঙ্গীরচর এলাকায়। বলাকা সিনেমার সামনে পাপোস বিক্রি করতেন তিনি।