শিরোনাম
আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সবাইকে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, এই নৌকা অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছে, এই নৌকাই দেবে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, (উন্নয়ন) অব্যাহত থাকতে হলে কী দরকার বলেন? নৌকা মার্কায় ভোট দরকার। একমাত্র নৌকা মার্কা স্বাধীনতা দিয়েছে, নৌকা হচ্ছে নূহ নবীর নৌকা, মহাপ্লাবন থেকে মানুষকে রক্ষা করেছে। এই নৌকা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছে, এই নৌকাই দেবে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত পীরগঞ্জে নৌকার প্রার্থী জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর জন্য ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের কাছে আমার এটিই আবেদন, আমি আপনাদের এলাকার পুত্রবধূ। কী বাহেরা, একখান ভোট মুই পামু না, হামাক একখান ভোট দিবা না, হামাকে একখান ভোট দিবা?
তিনি বলেন, এই যে আমার মেয়ে শিরিন শারমিন চৌধুরীকে দিয়ে গেলাম, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাকে জয়যুক্ত করার মানে আমাকে ভোট দেওয়া, সজীব ওয়াজেদ জয়কে ভোট দেওয়া, জয়ের ভোট, পুতুলের ভোট, তাকে ভোট দেওয়া।
অনেকেই দেশের স্থিতিশীলতা চায় না- মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮, ১৪ ও ১৮- প্রতিটি নির্বাচনে জয়লাভ করেছি, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র অব্যাহত থেকেছে, একটি স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো এই স্থিতিশীলতা অনেকেই চায় না।
তিনি বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর পকেট থেকে যেসব দল উঠে এসেছে, তারা মানুষের শান্তি দেখতে পারে না। যে কারণে আপনারা দেখেছেন... অগ্নিসন্ত্রাস, বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন, ট্রেনে আগুন।
বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, কয়েকদিন আগে আপনারা দেখেছেন ট্রেনের ফিসপ্লেট খুলে ফেলেছিল ওই বিএনপি-জামায়াত। ট্রেনের বগি পড়ে যাবে, দুর্ঘটনা হবে, মানুষ মরবে। মানুষ মারার ফাঁদ তারা তৈরি করেছে। এর চেয়ে ঘৃণার আর কী থাকতে পারে?
তিনি বলেন, ওই বিএনপি-জামায়াত মিলে অগ্নিসন্ত্রাস করছে। এই অগ্নিসন্ত্রাস এই জ্বালাও-পোড়াও, এটাই নাকি তাদের আনন্দ, এটাই নাকি তাদের আন্দোলন। মানুষের জন্য আমরা রাজনীতি করি। মানুষ হত্যা করে, মানুষ খুন করে কীসের আন্দোলন?
অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের তরুণ সমাজ এখানে আছে, ছাত্ররা আছে, সবাইকে বলব প্রত্যেককে সজাগ থাকতে হবে। ওই অগ্নিসন্ত্রাস যারা করতে আসবে, তাদের সঙ্গে সঙ্গে ধরতে হবে এবং ধরে তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। তাদের পুলিশের সোপর্দ করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মানুষের জীবন নিয়ে কাউকে খেলতে দেব না। আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করি। দিনরাত পরিশ্রম করি এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। সেখানে তারা আসে ধ্বংস করার জন্য। কাজেই এদের বিষয়ে সবাইকে সজাগ হতে হবে, সচেতন হতে হবে। প্রয়োজনে পাহারা দিতে হবে, জনগণকে এর প্রতিরোধ করতে হবে।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে জনগণ প্রতিরোধ করেছিল, ২০১৪ সালে জনগণ প্রতিরোধ করে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিল। আমরা সরকারে এসেছিলাম। কাজেই সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা।
সভাপতিত্ব করেন পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন রাজা।
প্রধানমন্ত্রী ও পীরগঞ্জের পুত্রবধূর আগমনে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয় পীরগঞ্জ।
সকাল থেকে পীরগঞ্জ সরকারি স্কুল মাঠে আসতে শুরু করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। দুপুরের মধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় পুরো মাঠ। স্কুল মাঠ ছাড়াও আশপাশের এলাকায় ছিলেন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে উড়োজাহাজে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তিনি। শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা।
সৈয়দপুর থেকে সড়কপথে প্রথমে রংপুরের তারাগঞ্জ যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে সংক্ষিপ্ত জনসভায় যোগদান শেষে মিঠাপুকুর যান। সেখানে আরেকটি জনসভায় যোগদান শেষে স্বামীর গ্রামের বাড়ি পীরগঞ্জের লালদীঘি ফতেহপুর যান শেখ হাসিনা।
ফতেহপুরে স্বামীর কবর জিয়ারত করেন এবং নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে সময় কাটান তিনি।