শিরোনাম
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সুশাসনের জন্য নাগরিককে (সুজন) ‘ভুয়া’ দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এরা বিএনপির দোসর৷
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের বিজয় র্যালি উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন। বিজয় র্যালিটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের গেট থেকে শুরু হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা আজ মিছিলের শহর। ঢাকা আজ নৌকার শহর। এখন সবখানে নৌকার মিছিল। সারাদেশে এখন নৌকার মিছিল। খেলা হবে। ফাইনাল খেলা ৭ জানুয়ারি। বিএনপির এক দফা ভুয়া, ২৮ দফা ভুয়া। যারা বলে ২৭ দল নির্বাচনে না এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না তারা ভুয়া। টিআইবি ভুয়া। সুজন ভুয়া। এরা বিএনপির দোসর।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ২৮ অক্টোবর লালকার্ড খেয়ে বিদায় নিয়েছে। নেতা নাই বিএনপির, আন্দোলন করবে কাকে দিয়ে? খেলা হবে, ১৮৯৬ জন প্রার্থী খেলবেন। খেলার মাঠ বাংলাদেশ। খেলা হবে হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ট্রেনে দেওয়া আগুনে সকালে চারটি তাজা প্রাণ ঝরে গেলো। বিএনপির জেলে আছে ১১ হাজার। জামিন পেলো ২ হাজার। ২১ হাজার নেতাকর্মী জেলে তাদের এ দাবি ভুয়া। তারেক রহমান জেলে যেতে ভয়, এমন ভীতু নেতার কথায় আন্দোলন হবে না। এরা ভুয়া।
তিনি বলেন, দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ শেখ হাসিনাকে ভোট দিতে উন্মুখ। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে যারা বাধা দেবে তাদের প্রতিহত করতে হবে। কে জিতবে, নৌকা; কে জিতবে, শেখ হাসিনা। সামনে শুভ দিন আসছে, ভালো দিন আসছে। নৌকায় ভোট দিলে দুর্দিন কেটে যাবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ফিলিস্তিনের ঘটনার যারা প্রতিবাদ করে না তারা খাঁটি মুসলমান না। ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি হামলার শেখ হাসিনাই প্রথম প্রতিবাদ করেন। বিএনপি-জামায়াত প্রতিবাদ করেনি। তারা সমমনা। তারা এলোমেলো জগাখিচুড়ি ঐক্য করেছে।
তিনি বলেন, মেট্রোরেল কে করেছে? এক্সপ্রেসওয়ে কে করেছে? পদ্মা সেতু কে করেছে? গ্রামে বিদ্যুৎ কে দিয়েছে? গ্রামকে শহর কে করেছে? বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা করেছেন। মাতারবাড়ি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র কে করেছে, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কে পাঠিয়েছে? মায়ের নামে সন্তানের রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা কে করেছে। শেখ হাসিনা করেছেন। নারীদের ডিসি-এসপি-ইউএনও-জজ এসব পদে কে নিয়েছে? শেখ হাসিনা নিয়েছেন। ভোটও তাকেই দিতে হবে। নারীদের সম্মান কে দিয়েছে, শেখ হাসিনা দিয়েছেন।
‘যারা বলে নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে ভোটার আসবে না তাদের বলি- ৭ তারিখ নারীদের লাইন লম্বা থাকবে, পুরুষদের চেয়ে নারীদের উপস্থিতি বেশি হবে’- যোগ করেন তিনি।
বক্তব্য শেষে বিজয় র্যালি উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এর আগে দুপুর পৌনে ২টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিজয় র্যালির আয়োজন। এসময় বিজয় র্যালির মঞ্চে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এ র্যালির আয়োজন করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। দুপুর আড়াইটায় বিজয় র্যালি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর ১টার পরই বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। এতে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারাও উপস্থিত হন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে আওয়ামী লীগের এ বিজয় র্যালি শুরু হয়ে শাহবাগ ও সায়েন্সল্যাব হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হবে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগকে ১৯টি শর্তে এই ‘বিজয় শোভাযাত্রা’ করার অনুমতি দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সোমবার বিজয় শোভাযাত্রা করার জন্য গত ১৩ ডিসেম্বর ডিএমপিতে অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছিল ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ। তবে কুয়েতের আমির শেখ নওয়াফ আল আহমদ আল জাবের আল সাবাহর মৃত্যুতে সোমবার সারাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হয়। ফলে বিজয় মিছিল একদিন পিছিয়ে মঙ্গলবার করার সিদ্ধান্ত নেয় মহানগর আওয়ামী লীগ।