শিরোনাম
রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকতে হলে বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি আসতে পারে বলে সরকার আশা করে, দুদিন আগেই এমন বক্তব্য দিয়েছিলেন প্রতিমন্ত্রী। সেই প্রত্যাশা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি দলের মুখপাত্র নই। আমি আশা করি। আমার দল আশা করে এমনটা বলিনি।
কীসের ভিত্তিতে এমন আশার কথা বলেছেন- এ প্রশ্নে শাহরিয়ার আলম বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। এ কারণে তাদের যে কোনো কথা কিংবা আবেদন, বিদেশিদের কাছে আকুতি-মিনতি একেবারে শূন্যের কোঠায় নেমে গিয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকতে হলে বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। এটা সর্বজনীন সত্য।
তিনি বলেন, তফসিল অনুসারে ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। কাজেই সেদিন পর্যন্ত নির্বাচনে আসাটা সবার জন্য উন্মুক্ত। সরে যাওয়ার সুযোগও আছে।
কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, চলতি গ্রীষ্মে লন্ডন সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কমনওয়েলথ মহাসচিবের বৈঠক হয়েছিল। তখন প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেছিলেন, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠালে স্বাগত জানানো হবে। কমনওয়েলথ সেক্রেটারির কার্যালয়ের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইন নিয়ে কাজ করা বিভাগের প্রধানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলদেশে অবস্থান করছেন। তারা নির্বাচন কমিশনসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমার সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা (প্রতিনিধিদল) তাদের পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করেছেন। তারা বলেছেন, অন্যান্য মিশনের মতো এটিও একটি অগ্রবর্তী মিশন। তারা তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে ফিরে গিয়ে প্রতিবেদন দেবেন। সময় যে খুবই সংক্ষিপ্ত, সে বিষয়ে তারা ওয়াকিবহাল। শেষ মুহূর্তে আসায় দ্রুতই প্রতিবেদন দেওয়ার চেষ্টা করবেন তারা।
তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন তারা (পর্যবেক্ষক দল) আসবেন কি আসবেন না, কমনওয়েলথের কর্তাব্যক্তিরা সেই সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছি, তারা আসবেন। আমরা তাদের লজিস্টিক প্রটোকলের সাপোর্টের বিষয়টি নিশ্চিত করেছি। তারা আমাদের প্রটোকল বিভাগের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। নির্বাচন নিয়ে আমরা একটি অস্থায়ী অনুবিভাগ তৈরি করেছি। সেই দপ্তরের ডিজির সঙ্গেও প্রতিনিধিদলটির বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
শাহরিয়ার আলম জানান, শুধু নির্বাচনই নয়, জলবায়ু, নারীর ক্ষমতায়ন, অভিবাসনসহ আরও অনেক বিষয়ে তাদের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয় আছে। এসব বিষয় নিয়ে আমরা অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবো।
নির্বাচনকেন্দ্রিক বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিনিধিদল কিছু বলেছেন কি না, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে নির্বাচনকালীন একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি থাকে, সেটা তারা জানেন। তারা এ বিষয়ে ওয়াকিফহাল। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশের মহাপরিদর্শকের সঙ্গে তারা আলোচনা করেছেন। তারা এ বিষয়ে জানেন।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে কমনওয়েলথ প্রতিনিধিরা নিজেদের কোনো প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, না, এমন কিছু তারা বলেননি।
তিনি বলেন, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে কোনো একটি বিশেষ দলের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক না। তবে সবার অংশগ্রহণ নির্বাচনের সৌন্দর্য বাড়ায়। আবার একটি সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তাদের দিয়ে শুধু শোভাবর্ধনের জন্য লোক দেখানোর প্রয়োজন নেই। এটা বাধ্যতামূলক কিছু না।