শিরোনাম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে পদত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমি উপদেশ দেই- যদিও দোষটা আপনার (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) না, তারপরও পদত্যাগ করা উচিৎ। কারণ আপনার কথা বাহিনী শোনেনি, আপনাকে মিস গাইড করেছে’। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
রবিবার (১৭ অক্টোবর) চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ পৌরসভায় গত ১৩ অক্টোবর রাতে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের গুলিতে নিহত চার জনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাধারণভাবে বললেন- আমি সব মন্দিরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। আসলে তো কেউ তার কথা শোনেনি। তার কথা শুনে যদি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতো, তাহলে তো আজকে এই ছেলেগুলো মারা যেতো না।’
‘‘...পদত্যাগ করতে না পারলে যে চারজন মারা গেছে তাদের বাড়িতে যান। ইমাম সাহেবদের প্রত্যেক আজানের পূর্বে 'হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই' বলতে হুকুম করেন’’ বলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
নিহতদের একজনের কথা তুলে ধরে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, আজকে যদি হৃদয়ের মায়ের কাছে গিয়ে আমাদের ব্যর্থতার জন্য সরাসরি মাফ চাইতে পারতাম তাহলে ভালো লাগতো। এই ব্যর্থতার জন্য আমার মুক্তিযোদ্ধা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকেও ক্ষমা চাইছি। এই দেশে যে কয়জন ভালো মন্ত্রী আছে আমি মনে করি তাদের মধ্যে আসাদুজ্জামান খান কামাল একজন। এত বড় একজন ভালো মানুষকে তার গোয়েন্দা বাহিনী বোকা বানিয়ে দিয়েছে।
হাজীগঞ্জের পুলিশ ও সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা একত্রিত হয়ে পরিস্থিতিটাকে মোকাবিলা করেছেন। কিছু ধর্মান্ধ ব্যক্তি কিছু যুবককে বিপথে নিয়েছেন। সেটা আপনারা ঠেকাবার চেষ্টা করেছেন। আমি দুটো মন্দির দেখেছি, এদের বাড়িঘর দেখেছি এবং আপনাদের কথা শুনেছি। আপনারা দেশপ্রেমিক সাংবাদিকের কাজ করেছেন। আমার কাছে মনে হয়েছে আপনারা নিরপেক্ষভাবে কথা বলেছেন। আপনারা কোনও কল্পকাহিনী সৃষ্টি করেন নাই।’
এ সময় ডা. চৌধুরী বলেন, ‘আজকে আমাদের সাহস নিয়ে কথা বলতে হবে। যেসকল মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকারকে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কোনও দেরি না, কালকে থেকেই দেওয়া শুরু করতে হবে। দ্বিতীয়ত আমরা মসজিদ-মন্দির পুলিশ পাহারা দিয়ে রাখবো না, অন্তর দিয়ে পাহারা দিয়ে রাখবো। আজকে বিষয়গুলো সবার দেখা উচিৎ এবং সবাই মিলে আমার অপর ভাই-বোনদের রক্ষা করবো।’
হাজীগঞ্জে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতরা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুন্দরপুর বাগডাঙা এলাকার সামছুর ছেলে বাবলু (৩৫), হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের রান্ধুনীমুড়ার শুকু কমিশনার বাড়ির তাজুল ইসলামের ছেলে আল আমিন (১৮) ও একই ওয়ার্ডের সেকান্দর বেপারী বাড়ির মো. ফজলুর ছেলে হৃদয় (১৪)। এ ছাড়াও কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে হাজীগঞ্জ পৌরসভার রান্ধুনীমুড়ার বাচ্চুর ছেলে শামীম (১৯) মারা গেছেন।
রবিবার দুপুরে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিহতদের পরিবারের সাথে দেখা করতে যান। যাওয়ার পথে গাউছিয়া হাইওয়ে এলাকার হাজীগঞ্জ বাজারে একটি রেস্টুরেন্টে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি। এ সময় তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছ থেকে ওইদিন কী ঘটেছিল- তার বর্ণনা শোনেন। পরে তিনি কয়েকটি মন্দির পরিদর্শন করেন।
এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, ৬৯’ শহীদ আসাদের ছোট ভাই ডা. নুরুজ্জামান, হাবিবুর রহমান বিজু, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান, সাবেক কাউন্সিলর মাহফুজা খানম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রচার ও মিডিয়া সমন্বয়ক হাসিবুদ্দিন হোসেন, রাজনৈতিক সমন্বয়ক ফরিদুল হক, সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তফা, ভাসানী অনুসারী পরিষদের ছাত্রফ্রন্টের নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটসহ প্রমুখ।