শিরোনাম
আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সারাদেশে পাড়া-মহল্লায় জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, সরকার তাদেরই গ্রেফতার করছে যারা আগুন সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত, যারা হুমুকদাতা-অর্থদাতা-নির্দেশদাতা বা আয়োজনকারী। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বহু মানুষকে হত্যা করেছে, কিন্তু জীবন্ত পোড়ায়নি, এরা (আগুন সন্ত্রাসীরা) পাকিস্তানি হানাদারদের চেয়েও জঘন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে যেমন পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল, আজকে এদের বিরুদ্ধেও তেমনই প্রতিরোধ গড়তে হবে।
বুধবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি ভবনে গণপ্রকৌশল দিবস ও ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ’র (আইডিইবি) ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘উন্নয়নের জন্য উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা নীতি’- এ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আইডিইবির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী ও আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
এসময় আইডিইবি ভবন প্রাঙ্গণে রাখা বিএনপির সমাবেশ-অবরোধে পুড়িয়ে দেওয়া দুটি বাসের ধ্বংসাবশেষের কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আগুন সন্ত্রাসীরা আসলে রাষ্ট্রের ওপর হামলা চালাচ্ছে। রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের একটির প্রধান হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি। তার বাড়িতে হামলার অর্থ বিচার বিভাগের ওপর হামলা। জাসেস কমপ্লেক্সে, পুলিশ হাসপাতালে এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে এই আইডিইবি ভবনেও হামলা চালানো হয়েছে। এটি পেশাজীবীদের সংগঠন। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন আওয়ামী লীগেরও না, বিএনপিরও না। এখানে কেন হামলা চালানো হলো এটি আমার বোধগম্য নয়।
‘আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় আমরা ফয়সালা করবো’- এ প্রত্যয় ব্যক্ত করে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ সাড়ে ১৭ কোটি মানুষের দেশ, পৃথিবীর ৩৫তম অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশ এখন ২০২৩ সালের দেশ, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বাংলাদেশ। বন্ধুরাষ্ট্রগুলো আমাদের পরামর্শ দিতে পারে, কিন্তু এমন পরামর্শ না যা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হতে পারে বলে প্রতীয়মান হয়। আমাদের সঙ্গে সবার সম্পর্ক ভালো।
বিএনপির সঙ্গে বিদেশিদের সম্পর্ক নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মনে করেছিল তাদের যারা একটু বাতাস দিচ্ছিল, তারা বাতাস দিতে দিতে দোলনায় চড়িয়ে শিশুদের মত ফিডার খাইয়ে ক্ষমতার দোলনায় চড়িয়ে দেবে। কিন্তু যারা সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজেই পালিয়ে যায় তাদের কেউ আর বাতাস দেবে না।
তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী যখন পাখি শিকারের মত করে ফিলিস্তিনে মানুষ শিকার করছে, শিশু হত্যা করছে, গতকালও ৬০০ জনকে হত্যা করেছে, এর বিরুদ্ধে কিন্তু বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। শুধু বিএনপি-জামায়াত একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া তারেক রহমানের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের কথোপকথনে ফখরুল সাহেব বলছেন, ‘গাজায় যেভাবে হত্যাযজ্ঞ হচ্ছে তাতে কিছু বলা দরকার’। ওপাশ থেকে তারেক রহমান পরামর্শ দিচ্ছেন, ‘গাজা অনেক দূরে, আমরা আমাদের সমস্যা নিয়ে আছি, এটা নিয়ে বলার দরকার নেই, কারণ কেউ নাখোশ হবে’।
‘যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিশ্চুপ থাকে তারা অন্যায়কারীকেই সমর্থন করে’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির এরা শুধু ইসলামের শত্রু নয়, এরা মানবতার শত্রু, দেশের শত্রু। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এরা বিদেশি বেনিয়াদের হাতে দেশটাকে তুলে দিতে চায়। সে কারণে ফিলিস্তিনে হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে একটি শব্দও বলেনি। বরং নিজেদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এরা দেশ বিক্রি করতেও দ্বিধা করবে না।
এসময় তিনি গণপ্রকৌশল দিবস ও আইডিইবির ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সাফল্য কামনা করেন। একই সঙ্গে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।