শিরোনাম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমরা মরতে হলেও মরবো, তবুও মাঠ ছাড়বো না। এটা বাংলাদেশের আরেক মুক্তিযুদ্ধ। এটাতে জিততে পারবো যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি।’
২৮ অক্টোবর নিয়ে আওয়ামী লীগ কোনো চাপে আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কোনো চাপে নেই, তবে পুরনো দিনের কথা ভুলতে পারি না।’
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা কোনো চাপে নেই, তবে পুরনো দিনের কথা ভুলতে পারি না। ২০১৩, ১৪ সালের অগ্নিসংযোগের কথা ভুলতে পারি না। তারাতো আগুন ছাড়া কথা বলে না। শান্তি তারা আসলে মন থেকে চায় কিনা, এটা দেখতে হবে।
নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোনো বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত বক্তব্যে গোটা নির্বাচন নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই। একটা বিষয়ে একেকজন একেক ধরনের মতামত দিতে পারে। কিন্তু একটা ইস্যুর মতামত নিয়ে পুরো নির্বাচন নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই। এ অবস্থায় নির্বাচন হবে না, এমন সন্দেহ কী তারা করেছে? করেনি। আগে পরের বক্তব্য দেখেন।
তিনি বলেন, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হবে, কোনো সংশয়ের কারণ নেই। আপনারাতো বাইরের কেউ না দেশেরই মানুষ, আপনারা দেখবেন।
এসময় ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে দেখিয়ে দেবো, আমরা শান্তির পক্ষে। সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। এদের দুরভিসন্ধি আছে, সাম্প্রদায়িক আরও দুএকটা শক্তি নিয়ে তারা অপকর্ম করতে চাইবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুলের সব খেলা ধরে ফেলি। কী করবে, টেমস নদীর পাড় থেকে ধমক খায়। মাঝে মধ্যে নার্ভাস দেখা যায়।
তিনি বলেন, বিএনপির কর্মী হত্যা মামলায় খোকন গ্রেফতার। অথচ অভিযোগ করছে, রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার। তাহলে কী আপনাদের কর্মী হত্যার বিচার হবে না? এ ক্ষেত্রে সরকারতো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও ছাড় দেয়নি। আপনিতো টেনেটুনে ২২ জনের নাম বলেছেন। আর আপনারা আমাদের ২২ হাজার নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছেন, আমরা ভুলিনি।
ওবায়দুল কাদের দাবি করে বলেন, ‘পুলিশ আমাদের মঞ্চ করতে দেয়নি। মির্জা ফখরুল মিথ্যাচার করেছে, সরকার নাকি আমাদের অনুমতি দিয়েছে, মঞ্চ করছি। আমরা কিছুটা করেছিলাম, পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছে। পুলিশ যখন অনুমতি দেবে, আমরা তখনই মঞ্চ করবো।’
ক্ষমতাসীন দলের এ নেতা বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় তাদের সারাদেশের লোক আর আমাদের থানার লোকদের নিয়ে সমাবেশ তুলনা করা হয়। যোগ-বিয়োগ আর তুলনা করতে মাথায় থাকতে হবে এটি, আমাদের এলাকার সমাবেশ। তাদের পুরো দেশের।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বেঁচে থাকতে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে দেবে না, এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা। বাংলাদেশ নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবো না।
কাদের বলেন, আমরা অশান্তি করতে চাই না। কারণ আমরা ক্ষমতায়। আমাদের দ্বারা অশান্তি হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। অশান্তি তারা চায়, যারা পরিবেশ নষ্ট করতে চায়। তাদের মতলব সম্পর্কে সতর্কতা অত্যন্ত প্রয়োজন।
তিনি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে এ সমস্যাগুলোর সমাধান করতে চাই। এ অপশক্তি বার বার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া উচিত নয়। এ অপশক্তির চিরতরে অবসান ঘটাতে হবে। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকতে হব।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের সময়ের এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এ দেশ স্বাধীনতার আদর্শে চলবে, বাকি পাকিস্তানের দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে চলবে। এটা আমাদের ঠিক করতে হবে।
৭১, ৭৫ এর ইতিহাস তুলে বর্তমান বিরোধী শক্তিকে সেটার জন্য দায়ী করে তিনি বলেন, এ অপশক্তির সঙ্গে আপস করতে পারি না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে আদালত। এ ব্যবস্থা নিয়ে আমরা ফাইট করেছিলাম। কিন্তু এ ব্যবস্থা বিতর্কিত করেছে তারা। বিচারপতি খায়রুল হক সংবিধানকে কচুকাটা করেননি, বরং সঠিক যায়গা পুনঃস্থাপন করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রয়োজন নেই, তিনি রায় দিয়েছেন, এটা কী অন্যায় করেছেন?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে বাংলাদেশের ব্যবস্থা আরও আধুনিক ও পরিশীলিত। এটা আমরা বিদেশী কূটনীতিকদের বুঝাতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, বিএনপি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে। যার কারণে নিজেদের ক্ষুধার আগুন নেভাতে মরণ কামড় দেবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ইতিহাস হলো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল, ও স্বৈরশাসনের ইতিহাস। ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা দখল ও হত্যা ধর্ষণের এবং দুর্নীতির ইতিহাস। বার বার বিশ্বে বাংলাদেশকে কালেমালেপন করেছে। দুর্নীতি করে নিজের আখের গোছায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শান্তি উন্নয়ন অগ্রগতির অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে একটি চিহ্নিত মহল সন্ত্রাস করার চেষ্টা করছে। গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করার অপচেষ্টা করছে। বিএনপি জামায়তের নেতৃত্বে দেশি বিদেশি মহল আবারও দেশে নৈরাজ্য করতে চায়।
কাদের বলেন, আপনাদের মনে আছে, এরাই ২০১৩, ২০১৪ ও ১৫ সালে অগ্নিসংযোগ ও মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এই স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রধান অন্তরায়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, মহানগর শাখা ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।