শিরোনাম
মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই দাবি করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। এ রাষ্ট্রের জন্য বিশেষ কোনো দেশের ভিসানীতি সম্মানজনক নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগ সরকার বদ্ধপরিকর। যারা বলেছেন নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু দেখতে চাই সেই তাদের চাওয়া আর আমাদের চাওয়ার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। যারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চায় তারা উদ্বিগ্ন হবেই।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এ দাবি করেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিতে বলা হয়েছে- আগামী সংসদ নির্বাচন যদি কেউ বাধাগ্রস্ত করে তাহলে তার ওপর ভিসানীতি প্রয়োগ হবে। যারা এখনো নির্বাচনের বিরোধিতা করে হুমকি দিচ্ছেন, নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছেন ওই দেশ তাদের ওপর কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় কি না জাতি দেখতে চায়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে অন্ধকার বাংলাদেশকে আলোয় উদ্ভাসিত করেছেন। দেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। বাংলাদেশ যখন বিশ্বের বুকে মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ২০৩১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে যাচ্ছেন এবং নির্বাচন কমিশন ও সারাদেশের মানুষ যখন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় শামিল হওয়ার পথে তখন নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
যারা ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের দেশ বানিয়েছিল সেই বিএনপি-জামায়াত এখন সরকার পতনের স্বপ্ন দেখছে। আন্দোলন আন্দোলন খেলা শুরু করেছে- বলেন হানিফ।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বিএনপি নেতারা নানা কথা বলছেন, তাদের কথার মধ্যে ঔদ্ধত্য দেখা যাচ্ছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, ক্ষমতা ছেড়ে দিতে। আমরা এ সমাবেশ থেকে জিজ্ঞেস করতে চাই ক্ষমতা কি মামার হাতের মোয়া? যে চাইলেই ছেড়ে দিলাম। আর তোমরা কারা। তোমাদের এ দেশের জনগণ চেনে। একাত্তরেরে রাজাকার শাবকদের কথায় সরকার পরিবর্তন হবে না।
বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে দেশ অন্ধকারে তলিয়ে গিয়েছিল উল্লেখ করে হানিফ বলেন, আর এখন তারা লম্বা কথা বলে। কিছুদিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্ট এ বিএনপিকে তৃতীয় গ্রেডের সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা করেছে।
তারেক রহমানের মতো পলাতক সন্ত্রাসীর হাতে দেশের মানুষ ক্ষমতা তুলে দেবে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, আপনারা (বিএনপি) কার হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে চান? চুরির দায়ে, হত্যা, সন্ত্রাস, লুটপাটের কারণে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে যে পলাতক আছে। সেই চোর, সন্ত্রাসের হাতে দেশের মানুষ ক্ষমতা তুলে দেবে? পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই, এ দেশে মানুষ কোনো খুনির হাতে ক্ষমতা তুলে দেবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি স্বপ্ন দেখছে, ভাবছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ষড়যন্ত্র মাধ্যমে ক্ষমতায় আসবে। আমর পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এ দেশের ক্ষমতার মালিক জনগণ। কোনো বিদেশি শক্তি কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে না।
শেখ হাসিনার ওপর দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ আস্থাশীল উল্লেখ করে হানিফ বলেন, যে সরকারের ওপর দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ আস্থাশীল সেই সরকারকে হুমকি দিয়ে লাভ হবে না। নির্ধারিত সময়ে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। জনপ্রিয়তা প্রমাণ করতে নির্বাচনে অংশ নিন। জনগণের কাছে যান। অতীতের হত্যা, সন্ত্রাসের জন্য ক্ষমা প্রাথনা করুন। জনগণ ক্ষমা করে দিতে পারে।
শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন ও মির্জা আজম এমপি, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সদস্য আনোয়ার হোসেন ও অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, যুলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, কৃষকলীগ সভাপতি সমীর চন্দ্র, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি।