যে দল কোনো নির্বাচন করতে দেয় না, সেই দল কেন করেন— বিএনপিকর্মীদের প্রতি এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি কি শুধু তারেক রহমানের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহৃত হবে না কি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকবে, সেটি নিয়ে আজকে বিএনপির ভাবা উচিত।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপিকর্মীদের প্রতি এমন প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে তারেক রহমান চান তিনি নিজে যতদিন নির্বাচন করতে পারবেন না, ততদিন বিএনপির কেউ নির্বাচন করতে পারবে না। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর বা জাতীয় সংসদ নির্বাচন, কোনোটিই না। এমনকি এমপি নির্বাচিত হলেও শপথ নিতে দেয় না। মির্জা ফখরুল সাহেব এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন, শপথ নিতে দেননি। আবার দলের অন্যরা সংসদ সদস্য হওয়ার ক’দিন পরে বলে যে সংসদে থাকা যাবে না। বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে আমার প্রশ্ন, যে দল আপনাদের কোনো নির্বাচন করতে দেয় না, সেই দল কেন করেন। আপনারা কী শুধু তারেক রহমানের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহৃত হবেন না কি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকবেন, সেটি নিয়ে ভাবা উচিত।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অদ্যম গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং আমাদের এ উন্নয়ন-অগ্রগতি আরও বেশি হতে পারতো যদি বিএনপি এবং তার মিত্ররা দেশে সাংঘর্ষিক রাজনীতি না করতো। বিএনপি-জামায়াত ও তাদের মিত্ররা এবং আর টেলিভিশনের পর্দা গরম করা কেউ কেউ কোনো উন্নয়ন দেখতে পায় না। ফখরুল সাহেব পদ্মা সেতু দিয়ে পার হয়েও ওপারে গিয়ে বলেন, দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি। ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে গিয়ে বলেন দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি, কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।’

বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের পার্থক্য উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ৫৬০টি নতুন মসজিদ বানান আর বিএনপি ৫০০ জায়গায় একযোগে বোমা ফাটায়। জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেন, আর বিএনপি বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালিয়ে দেয়। জননেত্রী শেখ হাসিনা স্কুল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দেন, আর বিএনপি পাঁচশ স্কুল ঘর একসঙ্গে পুড়িয়ে দেয়, সঙ্গে বইও পুড়িয়ে দেয়। আমরা যখন জঙ্গি ধরি তখন তারা বলে যে দেশে কোনো জঙ্গি নেই। এ অপরাজনীতি যদি দেশে না থাকতো দেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যেতো।

বিএনপির কর্মপন্থার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, ‘বিএনপি মানুষের কাছে যায় না, তারা প্রতিদিন কোনো না কোনো দূতাবাসে ঘুরে বেড়ায়। এখন তারা চুপসে গেছে। চেহারা সব মলিন। কারণ বিদেশিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে দেখতে পেলো যে তারা পরীক্ষায় পাস করেনি। আপনারা জঙ্গিদের নিয়ে রাজনীতি করবেন, জোটের মধ্যে তালেবানদের রাখবেন, জঙ্গি ধরলে বলবেন নাটক, দেশকে সাম্প্রদায়িকভাবে বিভক্ত করবেন এবং মানুষের গাড়ি-ঘোড়া পোড়াবেন, মানুষকে অবরুদ্ধ করে রাখবেন, পুলিশের ওপর হামলা করবেন, আপনার সঙ্গে জনগণও থাকতে পারে না বিদেশিরাও থাকতে পারে না। যারা অপরাজনীতি করে তাদের সঙ্গে কেউ থাকতে পারে না, সেই কারণে আজকে বিএনপির এ দশা।’

এ সময় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র লীগের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজারের সঞ্চালনায় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এবং চলচ্চিত্র লীগের প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্লাহ মনি বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং চলচ্চিত্র লীগের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, সহসভাপতি দিলারা ইয়াসমিন, পরিচালক এস এ হক অলীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা দেবু প্রমুখ। সভায় বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন ও চলচ্চিত্র শিল্পী-কলাকুশলী, পরিচালক, প্রযোজক, পরিবেশকরা যোগ দেন।