শিরোনাম
মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৩১ জুলাই) ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রিত্ব বড় কিছু নয় উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, জনগণের সেবক হয়ে কাজ করতে চাই। যারা মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করেনি তাদের বৈরিতা এখনো যায়নি। সেটা অতিক্রম করেই দেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে আর ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না।
প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলন দেখে ভয় পাবেন না। অনেকে এখন আন্দোলন, জ্বালাও পোড়াও করবে। করুক। আন্দোলন যে কেউ করতে পারে, কিন্তু জ্বালাও পোড়াও করতে দেবো না। মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। আর এই মন মরা (গোমড়া) অবস্থা দেখতে চাই না কারও। যে কেনো সমস্যা আসবে, সেটা মোকাবিলা করার মতো মনোবলও থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। স্বাস্থ্যসেবা সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। শতভাগ মানুষের ঘর বাড়ি থাকবে। কেউ পিছিয়ে থাকবে না। উন্নতি হবে সবার। তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত আমাদের কাজের ছাপ রাখছি। আগে যে হাহাকার ছিল, এখন কিন্তু সেটি নেই। আগে মিটিং করতে গেলে দেখতাম, ছেঁড়া কাপড়। এখন সেটি দেখি না।
তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কারণে দেশ এবং দেশের অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ফলে জরুরি অবস্থা আসে। সামান্য আন্দোলন-সংগ্রাম দেখলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়েও ঢাকায় যতটা হাহাকার, গ্রামেগঞ্জে কিন্তু সেটি নেই। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা। আমরা পরিকল্পনা করে দিয়েছি, এখন ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের পালা।
সরকারপ্রধান বলেন, পুরস্কার পাওয়ার পর কারো মধ্যে হাসিখুশি দেখছি না। সবার মধ্যে মন মরা, মন মরা ভাব, কেনো? সবাইকে হাসি খুশি থাকতে হবে। যারা পুরস্কার পেয়েছে, অভিনন্দন। যারা পায়নি, ভবিষ্যতে পাবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, অর্থনৈতিকভাবে প্রচণ্ড চাপ আমাদের না শুধু, সারা বিশ্বব্যাপী। উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু আমরা করোনা মোকাবিলা করে বিশ্বে দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছি। অর্থনৈতিক চাপ আছে, কিন্তু অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রেখেছি। এর পেছনে যারা কাজ করেছে, সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আপনারা আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন বলেই এটি সম্ভব হয়েছে।
সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রিত্ব বড় কথা না। আমি মনে করি, জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। সেটাই করে যাচ্ছি। সব ধরনের সেবা কীভাবে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া যায়, সে ব্যবস্থা করছি। কেউ ভালো কাজ করলে পুরস্কার দেওয়া, বিদেশ থেকে কর্মকর্তাদের ট্রেনিং করিয়ে নিয়ে আসা, এগুলো জাতির পিতা শুরু করেছেন। আমরা সেটা অব্যাহত রেখেছি। আমাদের করা কমিউনিটি ক্লিনিক বিএনপি বন্ধ করে দিয়েছিল। কারণ মানুষ এখান থেকে সেবা নিয়ে নাকি আমাকে ভোট দেবে। মানুষের কথা তারা চিন্তা করেনি। তাদের চিন্তা ছিল ভোটের। এটার ফলও পেয়েছে। ২০০৮ এর নির্বাচনে মাত্র ২৯ টা সিট পেয়েছে তারা। আমরা সরকার গঠন করি।
এসময় অনুষ্ঠানে ২৮ জন কর্মচারী ও দুইটি প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন।