শিরোনাম
বিএনপি বিদেশিদের হাত-পায়ে ধরে আগামী জাতীয় নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি চায় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আমরা অংশগ্রহণমূলক অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। যে নির্বাচনের আয়োজক নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী দিনের সরকার নির্বাচিত হোক, সেটিই আমরা চাই। কিন্তু বিএনপি নির্বাচন কমিশনের কাছে, বিদেশিদের হাত-পায়ে ধরে নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি চাচ্ছে।’
শনিবার (১৭ জুন) দুপুরে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) ‘শরৎকালীন সেমিস্টার ২০২৩’-এর ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে মন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। আইআইইউসি-এর সীতাকুণ্ডের কুমিরা ক্যাম্পাস অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপিকে তো নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি সরকার, নির্বাচন কমিশন কিংবা বিদেশিরা দিতে পারবেন না। তারা আসলে নির্বাচনকে ভয় পান। আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো- এসব বকবকানি না করে, তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি যে মাঠে মারা গেছে, সেই বাস্তবতা মেনে নিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন।
তিনি বলেন, বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি এখন মাঠে মারা গেছে। শুধু মির্জা ফখরুল ও তাদের দলের নেতাদের মুখে এ দাবি আছে। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আন্তর্জাতিক মহলের হাত-পায়ে ধরে বিভিন্ন সময়ে তুলে ধরেছে। কিন্তু কোনো দেশ তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সমর্থন করেনি। সরকারকেও কেউ বলেননি যে, নির্বাচনকালীন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার করতে হবে।
বিএনপির সমাবেশে যোগ দেওয়ার পথে দলটির নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ ইতিহাস-ঐতিহ্যের অনেক স্থাপনা ভাঙচুরের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, তারুণ্যের সমাবেশের কথা বলে তারা যেভাবে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ ইতিহাস-ঐতিহ্য, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনসহ মুক্তি সংগ্রামে যারা যুক্ত ছিলেন, তাদের ছবি ও ম্যুরাল ভাঙচুর করেছেন, তাতে প্রমাণিত হয় বিএনপি তারুণ্যের সমাবেশ করে তাদের তরুণদের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের শিক্ষা দিচ্ছে। বিএনপি নেতারা সারাদেশে সন্ত্রাসীদের সমাবেশ ঘটাচ্ছেন। নতুনভাবে নৈরাজ্য করার জন্য তাদের শিক্ষাও দিচ্ছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
সাংবাদিক নাদিম হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত মূল আসামিসহ অনেককেই দ্রুত গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যাতে হয়, সেজন্য যা কিছু করা দরকার সবকিছুই করা হবে। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, সেজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
এর আগে আইআইইউসির নবাগত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে হাছান মাহমুদ বলেন, স্বপ্ন দেখতে হবে, স্বপ্নের সঙ্গে প্রচেষ্টাকে যুক্ত করতে হবে। স্বপ্নের সঙ্গে যদি প্রচেষ্টাকে যুক্ত করা না হয়, তাহলে শুধু স্বপ্ন দেখে কোনো লাভ নেই। মানুষ যখন স্বপ্ন দেখে, স্বপ্নের সঙ্গে যখন প্রচেষ্টা যুক্ত হয়, তখন তার মধ্যে ইলেকট্রো ম্যাগনেটিভ পাওয়ার জন্ম নেয়। সেই শক্তি তাকে স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে দেয়।
তিনি বলেন, জীবন হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্র। নিরন্তর উজানের বিপরীতে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও প্রতিনিয়ত প্রতিকূলতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার নাম হচ্ছে জীবন। যে সেভাবে জীবনকে নেবে, সে জীবনে অনেক দূর এগোতে পারবে। যে প্রতিনিয়ত জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করার মানসিকতা নিয়ে জীবনযুদ্ধে নামবে, সে জীবনকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সব মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় না। খুব কম মানুষের স্বপ্ন তীরে ভিড়ে। কিংবা খুব কম মানুষের স্বপ্ন, স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে। কিন্তু সেই মানুষের অনেক স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় যে, স্বপ্নের সঙ্গে প্রচেষ্টাকে যুক্ত করে। তাই অভিভাবকদের অনুরোধ জানাবো সন্তানদের স্বপ্ন দেখাতে শেখাবেন। সন্তান যেন স্বপ্ন দেখে। সেই স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি সন্তান যেন প্রচেষ্টাকে যুক্ত করে।
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান।
অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবু রেজা মো. নেজাম উদ্দিন নদভী এমপি, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এমপি, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির প্রমুখ।