শিরোনাম
সন্ত্রাসকে রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি হিসেবে সরকার গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার (১৯ মে) এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।
নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও জামিন নামঞ্জুরের প্রতিবাদসহ ১০ দফা দাবিতে আজ শুক্রবার সারা দেশে বিভিন্ন জেলা ও মহানগরে জনসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। কিন্তু কর্মসূচি শুরুর আগেই বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহসচিব।
এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে, গণতন্ত্রকে মাটিচাপা দিয়ে সন্ত্রাসকেই রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে। সেকারণেই বিরোধীদলীয় কোনো কর্মসূচিকেই সহ্য করতে পারছে না সরকার।
বিবৃতিতে বলা হয়, জনসমাবেশ বানচাল করার লক্ষ্যে গতকাল ফেনী জেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা অতর্কিত বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে লেমুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিন্টু মেম্বার, পরশুরাম উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শাকিল, সদর উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসির আরাফাত, মোটবি ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি বাদলসহ প্রায় অর্ধশাতাধিক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে এবং দুই শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম আফজাল হোসেনের বাড়িতে ২০ মে বরিশাল শহরের জনসমাবেশ উপলক্ষে প্রস্তুতি সভায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা করে দলের নেতা মানিক, পলাশ মোল্লা, ইয়াসিন ও হানিফ বেপারিসহ প্রায় ২০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আহত করে এবং বাড়িতে থাকা আসবাবপত্র ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
এ ছাড়াও গত রাতে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শওকত হোসেন সরকার, মহানগর বিএনপির সদস্য মাহবুবুল আলম শুক্কুর ও মহানগর তাঁতীদলের আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম বেপারির বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালায় এবং কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এই ধরনের সহিংসতা ও বিনা কারণে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশের তল্লাশি এবং গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, মানুষের আওয়াজ শুনলেই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী আতঙ্কিত বোধ করছে। তাই জনসমর্থহীন এই সরকার সন্ত্রাসের ওপর নির্ভর করেই জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম হু-হু করে বেড়ে যাচ্ছে। সরকারের লোকরা সর্বত্র সিন্ডিকেট তৈরি করে জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই অনাচার আড়াল করতে অবৈধ গণবিচ্ছিন্ন সরকার বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দিচ্ছে। সরকারি বাহিনী গুম-খুম, মামলা, গ্রেপ্তারসহ নানা ধরনের নিপীড়ন নির্যাতন নামিয়ে এনেছে আন্দোলনরত বিরোধী শক্তির ওপর। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ফেনী জেলায় বিএনপিসহ এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর সহিংস আক্রমণ চালায় এবং তাদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দলের নেতাকর্মীদের ওপর এই নিপীড়ন-নির্যাতন করেও বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচিকে বানচাল করতে পারবে না। গণতন্ত্র অর্জনের জন্য গণতন্ত্রকামী মানুষের অগ্রযাত্রাকে থামাতে পারবে না।
তিনি বলেন, দেশবাসী এখন এক অত্যাচারী ও নিপীড়ক সরকারের বর্বর শাসনে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় রয়েছে। জনগণের নিকট জবাবদিহিতাহীন এই সরকার প্রতিদিন প্রতিনিয়ত নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণের মাধ্যমে দেশের মানুষকে আতঙ্কিত করে রাখতে চায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসীদের দিয়ে সারা দেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের টার্গেট করে তাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। তবে তাদের কোনো নীলনকশাই বাস্তবায়িত হবে না। জনগণ জেগে উঠেছে তাদের হারানো অধিকার ফিরে পেতে, তারা এখন দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে অঙ্গীকারবদ্ধ। জনগণের শক্তির কাছে যুগে-যুগে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে ফেনী ও বরিশাল জেলায় আহত বিএনপি নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করেন একই সঙ্গে গাজীপুর মহানগরে গ্রেপ্তারকৃত বিএনপি নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান।