শিরোনাম
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি তো নিজেরা সন্ত্রাসী দল, সুতরাং দশ ট্রাক অস্ত্র পাচার করে ভারতবর্ষেও তারা অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে উন্নয়ন সমন্বয় সভার আগে সন্ত্রাসী অনুপ চেটিয়া সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে তৎকালীন বিএনপি সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় দশ ট্রাক অস্ত্র আনা ও খালাসের ব্যাপারে সহযোগিতা করেছে বলে বক্তব্য দিয়েছেন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যে কথাটি আমরা এতদিন বলে আসছিলাম। বিএনপির মন্ত্রী-এমপি, হাওয়া ভবন ও হাওয়া ভবনের বরপুত্র তারেক রহমান যে অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত ছিল এটি অনুপচেটিয়ার সাম্প্রতিক বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, শনিবার বিএনপি সারাদেশের জেলায় জেলায় বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। এগুলো করে তারা আসলে দেশে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আগের কর্মসূচিতে তারা গাড়িঘোড়া পুড়িয়েছে। আমাদের শান্তি সমাবেশের ওপর হামলা চালিয়েছে। সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের পাশে থাকা, দেশে যাতে কেউ শান্তি-শৃঙ্খলা স্থিতি নষ্ট করতে না পারে।
তথ্যমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়ন শীর্ষক সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. আমিনুর রহমান। সমন্বয় সভায় বিভিন্ন সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনা সরকার গঠন করার পর ঘোষণা করেছিলেন বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী কোনো দেশে অশান্তি সৃষ্টি করা আমরা সহ্য করব না। সেই কারণে এ ধরনের চোরাচালান এবং অস্ত্র চোরাচালান পরিপূর্ণভাবে বন্ধ করা হয়েছে। গত বছর আমি ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো সফরে গিয়েছিলাম। বিএনপির সময়ে হাওয়া ভবন এবং তারেক রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় অস্ত্র চোরাচালান হয়েছে, বর্তমানে যে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে সেগুলো হচ্ছে না, সেজন্য আসামের মুখ্যমন্ত্রী আমার কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন।
বিএনপির সাম্প্রতিক কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা কোনো পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছি না, কিন্তু যারা রাজনীতির নামে মানুষ পুড়িয়েছে, জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, জনগণের সহায় সম্পত্তিতে আগুন দিয়েছে তারা যে আবার কখন একই কাজ করবে সেটি বলা যায় না। তাই সমগ্র বাংলাদেশে আমরা আগামীকাল শনিবার প্রত্যেকটি জেলায় শান্তি সমাবেশ করব এবং সতর্ক দৃষ্টি রাখব যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে না পারে। কারণ বিএনপির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।
হাছান মাহমুদ বলেন, এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যখন মাঠে নামে, তখন জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার জন্য বাধ্য হয়ে আমাদেরও মাঠে থাকতে হচ্ছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মাঠের রাজনীতির দল, আমরা বিরোধী দলে যখন ছিলাম তখন যেমন মাঠে ছিলাম, সরকারি দল হলেও মাঠের রাজনীতির দল হিসেবে সব সময় মাঠে আছি এবং থাকবো।
বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন সংবিধানের দোহাই দিয়ে বিরোধী দলের রাজনীতির দমনের চেষ্টা করছে সরকার- এমন বক্তব্যের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি বা কোনো দলকে দমানোর চেষ্টা করছি না। সেটি হলে তো বিএনপি কোনো অনুষ্ঠান করতে পারত না। আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম তখন আমাদের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দুই পাশে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আমাদের সেখান থেকে বের হতে দিত না। এমনকি আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তারা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল, সেখানে অভিযান চালিয়েছিল। কাউকে বের হতে দেয়নি।
তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সেখানে ছুটে যেতে হয়েছে। আমাদের কর্মীদের তাদের পেটুয়া বাহিনী ও পুলিশ দিয়ে যে হামলা করেছিল সেখান থেকে উদ্ধারের জন্য, আমিও সেদিন সাথে ছিলাম। সেই ধরনের ঘটনা তো এখন ঘটে না, বলেন তথ্যমন্ত্রী।