শিরোনাম
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির কাজ হচ্ছে দিনে পদযাত্রা, আর রাতের বেলায় বিভিন্ন অ্যাম্বাসিতে গিয়ে কূটনীতিকদের হাতে-পায়ে ধরা (পদলেহন), এ হচ্ছে তাদের কাজ। এ দেশে কোনো কূটনীতিক কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারেনি, আগামীতেও পারবে না।
তিনি বলেন, এ দেশের ক্ষমতার মালিক জনগণ। আমরা জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি। আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেছে। আগামী নির্বাচনেও জনগণের রায় নিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে আবার সরকার গঠন করবে।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামীমের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না, পারে শুধু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে। বিএনপির কতটুকু শক্তি আছে আমাদের জানা আছে। তাদের আন্দোলন হচ্ছে নৈরাজ্য আর সন্ত্রাস। রাজনীতির নামে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে আমরা দিতে পারি না। ২০১৩ থেকে ১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাসের পর এতদিন যারা আত্মগোপনে ছিল, তাদের আবার গ্রামগঞ্জে ফিরিয়ে এনে পদযাত্রা করছে বিএনপি। আন্দোলন করতে করতে তাদের ১৪ বছর কেটে গেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি বুঝতে পেরেছে আগামী নির্বাচনেও তাদের কোনো সম্ভাবনা নেই, তাই তাদের নির্বাচন ভীতি পেয়ে বসেছে। একটু বিশ্লেষণ করলেই বুঝা যায় বিএনপির সম্ভাবনা কতটুকু। ২০০৮ সালে সমগ্র বিশ্ব স্বীকৃত একটি ভালো নির্বাচনে বিএনপির আসন মাত্র ২৯টি, আর উপনির্বাচনে দুটি বেড়ে ৩১টি হয়েছে। ২০১৪ সালে নির্বাচনে পরাজয় জেনে নির্বাচন থেকে পালিয়ে গেছে। ২০১৮ সালে ডান-বাম, অতিডান-অতিবাম আর তালেবান সবাইকে নিয়ে ঐক্য করে বিএনপির আসন সাতটি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন সবাইকে নিয়ে ঐক্য করে মাঝেমধ্যে বলে ৩২ দল, কখনও ১২ দল, আবার কখনও বলে ২২ দল। আবার বলে ৫৪ দল। আসলে কত দলের যে বিএনপির জোট সেটা বলা মুশকিল। ২২ দল ও ১২ দল মিলে ঢাকা শহরে এক জায়গায় সমাবেশ করলে সেখানে মানুষ পাওয়া যায় পঞ্চাশ জন। আর সাংবাদিক থাকে একশ জন। এ হচ্ছে তাদের সমাবেশ।
মির্জা ফখরুলকে নেতা বানাতে চান না যা বিএনপির নির্বাচন ভীতির আরেকটি কারণ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান তো নির্বাচন করতে পারবেন না। তাই তারা নির্বাচনে গিয়ে মির্জা ফখরুলকে নেতা বানাতে চান না। বিএনপির পতাকাটা তারা মির্জা ফখরুল কিংবা অন্য কারো হাতে তুলে দিতে চান না। সেই কারণেই তাদের নির্বাচন ভীতি পেয়ে বসেছে। নির্বাচন বানচাল করার জন্য অতীতে যেমন ষড়যন্ত্র করেছে এখনও সেই পথেই হাঁটছে বিএনপি।
তিনি বলেন, আপনারা নির্বাচনে যাবেন না, নির্বাচন বর্জন করবেন। আবার সরকারকে বিদায় দিতে চাইবেন, সেটিতো দেশবিরোধী কাজ। সেই দেশবিরোধী কাজ কাউকে করতে দেওয়া হবে না। আপনারা সরকারের বিদায় চান খুব ভালো কথা। আপনারা নির্বাচনে আসুন, নির্বাচনে এসে জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। জনগণ যদি আপনাদের ভোট দেয়, তাহলে তো আপনারা ক্ষমতায় যেতে পারবেন।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাজপথের দল। আমরা জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে রাজনীতির পথে নেমেছি, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কিংবা শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য রাজনীতি করি না, জনগণের জন্য রাজনীতি করি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক কিংবা না থাকুক রাজপথে সবসময় থাকবে। আগামী নির্বাচনে ইনশাল্লাহ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। এজন্যই ওদের মাথাটা খারাপ।
তিনি বলেন, ১৪ বছর যে উন্নয়ন হয়েছে সেই উন্নয়নের প্রচার করতে হবে নেতাকর্মীদের। ১৪ বছর আগের চিত্র আর এখনকার চিত্র মানুষকে দেখান। যদি উন্নয়নের চিত্র আমরা সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যকোনো জায়গায় ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই।
অগ্নিসন্ত্রাসীদের ধরার জন্য মানুষের দাবি আছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তাদের ধরতে মাঝেমধ্যে পুলিশ অভিযান চালায়। প্রয়োজনে হুকুমদাতাদেরও ধরতে হবে। সমগ্র বাংলাদেশে পরিকল্পনা করে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের মিত্ররা আবারও নৈরাজ্য সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
বিএনপির পদযাত্রায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো পাল্টা কর্মসূচি নেই জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে চোর-ডাকাতরা যেমন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, রাজনীতির নামে যারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তারা যেন দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখা এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করা সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ইউনুস গণি চৌধুরী, উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এস এম রাশেদুল ইসলাম, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভির হোসেন চৌধুরী তপু, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বাসন্তী প্রভা পালিত প্রমুখ।