শিরোনাম
সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের পালে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। চলতি বছরের মাঝমাঝিতে সিলেট সিটি নির্বাচন হওয়ার কথা। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের মৃত্যুর পর এখানে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে হচ্ছেন তা নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সবার আগ্রহ রয়েছে। আওয়ামী লীগের অন্তত অর্ধডজন নেতা মেয়র পদে দলীয় মনোয়ন পেতে তৎপর হলেও তারা হঠাৎ থমকে গেছেন। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেটে কামরানের বিকল্প হচ্ছেন এমন খবর এখন মুখে মুখে। দলের হাইকমান্ড থেকে তাকে ‘সবুজ সংকেত’ দেয়া হয়েছে বলেও প্রচার পেয়েছে। ‘সবুজ সংকেত’ পেয়ে সম্প্রতি দেশে এসেছেন আনোয়ারুজ্জামান।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংসদ ভবনের অফিসে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। পরদিন নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করে শ্রদ্ধা জানান।
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার বাসিন্দা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গতকাল বুধবার বিকেলে ভোরের কাগজকে বলেছেন, তিনি প্রার্থী হচ্ছেন শুনে সিলেটের সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীরা উচ্ছাস প্রকাশ করছেন। বরেণ্য ব্যক্তিরা এ খবর শুনে অভিভূত। স্থানীয় সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন তাকে পেয়ে, তারা তাকে সাদরে বরণ করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, সিলেটের মানুষের জন্য সব সময় তিনি নিবেদিত। যেকোনো সংকটে মানুষের পাশে ছিলেন, আমৃত্যু থাকবেন। আগামিতে ভাল কিছু হবে বলে মনে করছেন তিনি।
জানা গেছে, সাবেক সংসদ সদস্য ও সিলেটের প্রবীণ নেত্রী সৈয়দা জেবুন্নেছা হককে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হয়। এরপর তিনি দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে যান। ওই সাক্ষাতেই সিলেট সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠে আসে। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী সিলেট সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে আনোয়ারুজ্জামানের নাম বিবেচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে জানান জেবুন্নেসা হক। এরপর থেকেই মেয়র পদে আলোচনায় ওঠে আসে আনোয়ারুজ্জামানের নাম। এখন নগর ছেঁয়ে গেছে তার ছবি সংবলিত পোস্টার-ফেস্টুনে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল বলেন, ‘সিটি নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে আনোরুজ্জামানের কথা বিবেচনা করার কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এমনটি জেবুন্নেছা হক আমাকেও বলেছেন। আরো অনেককেই এ কথা বলেছেন তিনি। নাদেল আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ আরো কিছু শীর্ষ নেতার কাছ থেকেও এ ব্যাপারে আমি ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়েছি।’
এদিকে মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে আলোচনা শুরুর পর ২২ জানুয়ারি দেশে আসেন আনোয়ারুজ্জান চৌধুরী। তাকে সংবর্ধনা জানাতে ওই দিন বিমানবন্দরে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঢল নামে। শোভাযাত্রার মাধ্যমে বিমানবন্দর থেকে তাকে নগরে নিয়ে আসেন নেতা-কর্মীরা। এরপর ২৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আনোয়ারুজ্জামান। সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী তাকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের ১৫ জুন কামরান মারা যান। সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগের অর্ধডজন নেতা তৎপর। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এটিএম হাসান জেবুল, কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ এবং বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের ছেলে আরমান আহমদ শিপলু উল্লেখযোগ্য। আনোয়ারুজ্জামান গত দুটি সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎপরতা শুরু করেন। চলতি মাসে হঠাৎ করেই সিলেট সিটি নির্বাচনের মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে উঠে আসে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নাম। তিনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত।