শিরোনাম
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘তারেক রহমান মানে দুর্নীতির বরপুত্র। আলী বাবার চল্লিশ চোরের বড় চোরের নাম আমি জানি না, কিন্তু কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় হাওয়া ভবনের সবচেয়ে বড় চোর কে? বলবে, তারেক রহমান। হাওয়া ভবনের সবচেয়ে বড় চোর ও সন্ত্রাসীদের হাতে দেশ তুলে দেওয়া যাবে না।’
তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন তারা যদি আওয়ামী লীগকে বিদায় দিতে পারে তাহলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে সরকার গঠন করবে। আর বিএনপি নেতা আসাদুল হক দুলু নাকি বলেছেন যদি তারা ক্ষমতায় যান, পিঠের চামড়া তুলে ফেলবেন। তারা যদি আবার ক্ষমতায় যেতে পারেন তাহলে সব মানুষের পিঠের চামড়া তুলে ফেলবেন। যারা মানুষের পিঠের চামড়া তুলে ফেলতে চান তাদের হাতে দেশ তুলে দিতে পারি না। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কৃষক লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে তথ্যমন্ত্রী আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় দলের দায়িত্বশীল নেতারাও সঙ্গে ছিলেন।
উত্তর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলন উদ্বোধন করেন কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ। সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ নেতা আকবর আলী চৌধুরী, রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি হচ্ছে শীতের পাখি। শীতকালে যেমন সাইবেরিয়া থেকে শীতের পাখিরা এসে আমাদের এখান থেকে ধান খেয়ে মোটাতাজা হয়ে আবার চলে যায়, বিএনপিও হচ্ছে শীতের পাখির মতো। পাঁচ বছর খবর নেই, নির্বাচন যখন আসে তখন শীতের পাখির মতো আসবে। এ শীতের পাখিদের আর সুযোগ দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। তারা জনগণের শত্রু। তাদের সবপর্যায়ে প্রতিহত করতে হবে। যারা হাওয়া ভবন বানিয়ে মানুষের কাছ থেকে চাঁদা তুলতো, যারা বিদ্যুৎ না দিয়ে খাম্বা লাগাতো, যারা একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছে, যারা শাহ এসএম কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টার, মঞ্জুরুল ইমামকে হত্যা করেছে, যারা সারাদেশে বাংলাভাই সৃষ্টি করে গাছের সঙ্গে টাঙিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, পাঁচশ জায়গায় বোমা ফাটিয়েছে, তাদের হাতে দেশ তুলে দিতে পারি না।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, কৃষক লীগ শেখ হাসিনার অত্যন্ত পছন্দের সহযোগী সংগঠন। করোনা মহামারির সময় যেভাবে কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেটি সত্যিই অনন্য। কৃষকরা যখন ধান কাটার মানুষ পাচ্ছিল না, তখন কৃষক লীগের নেতাকর্মীরা ধান কেটে মাথায় করে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন। ১৪ বছর আগে দেশের অবস্থা কী ছিল, সেটি কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের মানুষকে মনে করিয়ে দিতে হবে। শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বের কারণে দেশের এ পরিবর্তন হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের পরিবর্তন অনেকের পছন্দ নয়। এ পরিবর্তনের কারণে দেশের মানুষ আজ শেখ হাসিনার পেছনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এজন্য এ পরিবর্তন তাদের সহ্য হয় না। এজন্য বিএনপি এখন সারাদেশে সমাবেশ করছে। সমাবেশ করে সন্ত্রাসীদের জড়ো করছে। গতকাল কাঁচপুর ব্রিজের নামফলক জ্বালিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ তারা আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ফখরুল-রিজভী এবং গয়েশ্বররা যাই বলুক না কেন, কয়েক দিন আগে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলে গেছেন, বাংলাদেশ যে অগ্রগতি করেছে এটা পৃথিবীর জন্য উদাহরণ, বিস্ময়কর অগ্রগতি।
এদিকে সকালে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যখন সমাবেশ ডাকে তখন পরিবহন মালিক এবং শ্রমিকরা সবাই আতঙ্কে থাকে। কারণ অতীতে ২০১৩-১৪ ও ’১৫ সালে বাস-ট্রাকে আগুন দিয়েছিল বিএনপি। বাস-ট্রাক ও জনগণের সম্পত্তির ওপর হামলা করেছিল তারা। সেজন্য মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘট ডাকেন। সুতরাং এটার সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।
তিনি বলেন, পরিবহন ধর্মঘট, সেটা তো প্রাইভেট সংস্থা। সেখানে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, বাসদ, আওয়ামী লীগসহ সব দলের নেতা আছেন। সবাই মিলে পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক সমিতি। তারা সিদ্ধান্ত নেন তাদের নিজস্ব নানাবিধ কারণে।