শিরোনাম
বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, দেশ যায় কোন দিকে, মানুষের সমস্যা যায় কোন দিকে। মানুষ কোন বিষয় নিয়ে সাফার করছে আর আমরা আলোচনা করছি কী? অদ্ভুত লাগে।
বুধবার সংসদ অধিবেশনে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে আলোচনাকালে তিনি একথা বলেন।
রুমিন ফারহানা বলেন, করোনাকালে অর্থনৈতিকভাবে কতগুলো পরিবার পঙ্গু হয়ে গেছে সেই খবর কি আমাদের কাছে আছে? করোনাকালে হাতেগোনা কিছু রিপোর্ট আসছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, করোনায় সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় পড়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে নিরুপায় হয়ে মানুষ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, অনেকে প্রাণে হয়তো বেঁচে গেছেন কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে গেছেন। জমানো টাকা শেষ হওয়া থেকে শুরু করে বিরাট ঋণের জালে আটকা পড়েছেন বহু মানুষ। করোনার আগে যেখানে মধ্যবিত্ত ছিল ৭০ শতাংশ সেখানে মধ্যবিত্ত নেমে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। দরিদ্র মানুষ যেখানে ছিল ২০ শতাংশ সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ শতাংশ। করোনাকাল বলে হয়তো এ ব্যাপারে মিডিয়ার কিছুটা মনোযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু বেসরকারি মেডিক্যালে গিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার ইতিহাস কিন্তু নতুন কিছু নয়।
বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, করোনাকালে যে কয়টি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে মানুষকে সর্বস্বান্ত করার অভিযোগ আসছে বলতে কষ্ট লাগে তার মধ্যে সব থেকে শীর্ষে আছে সরকার দলীয় একজন সংসদ সদস্যের হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ। এই দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা সরকার ধীরে ধীরে বেসরকারি খাতে তার কর্মীদের হাতে এমনভাবে তুলে দিচ্ছে যে চট্টগ্রামে সিআরবি নামে যে জায়গাটি আছে, যেটিকে চট্টগ্রামের অক্সিজেন বলা হয়; সেটাও নাকি এখন বেসরকারি হাসপাতাল করার জন্য সেই জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হবে। রেলওয়ের জায়গা বলতে তো কিছু নেই। সবই রাষ্ট্রীয় জায়গা, এই রাষ্ট্রীয় জায়গা বেসরকারি খাতে তুলে দেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক।
হারুন সাহেব ৩৮ লাখ টাকায় পর্দা কেনার তথ্য কোথায় পেলেন, সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
‘৩৮ লাখ টাকায় হাসপাতালের পর্দা কেনা হয়েছে’-বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদের এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বুধবার জাতীয় সংসদে হারুনের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির হারুন সাহেব বলেছেন ৩৮ লাখ টাকা দিয়ে পর্দা কেনা হয়েছে। কিন্তু এটা কোথায় হয়েছে আমার জানা নেই। এটা কেনা হয়নি। ভুল তথ্য দিলে জনগণ ভুল বুঝে, এটা সঠিক না।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০ হাজার ইউনিট রয়েছে। এর মধ্যে যন্ত্রপাতি রয়েছে। এটা ব্যবহার হলে একটা সময় পরে তা নষ্ট হয়ে যায়। একটা সময় এটা ঠিক করতে হয়। যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। তা আমরা করে যাচ্ছি।
বিএনপির সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা টিকার কথা বলেছেন তিন হাজার টাকা। আপনাকে তো আগে জানতে হবে, তারপর বলতে হবে। অর্ধেক নয়, আপনাকে পুরো বিষয় নিয়েই বলতে হবে। যখন টিকা দেওয়া হয়, তা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে দেওয়া হয়। এটার সঙ্গে জনবল, সংরক্ষণাগার জড়িত রয়েছে। এখানে শুধু টিকার দাম তিন হাজার টাকা না।
এর আগে সংসদে দাঁড়িয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, বিএনপির সময় কি কোনো হাসপাতালে ৩৮ লাখ টাকা দিয়ে পর্দা কেনা হয়েছিল? গত দশ বছরে যে হাজার হাজার কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো ব্যবস্থা আছে?
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে ১৩ বছর আপনারা ক্ষমতায় আছেন। দেশের গণতন্ত্রের সূচক কোথায় আছে? প্রতিদিন গণমাধ্যমে এমন কোনো বিভাগ নেই যেখানে দুর্নীতির খবর প্রকাশ হচ্ছে না। এগুলো পড়েন। গত ১২ বছরে ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। আধুনিক প্রযুক্তি এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে এই বিষয়গুলো অহেতুক দোষারোপ না করে আমরা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। গণতন্ত্রের যে সঙ্কট চলছে, গণতন্ত্রের যে সঙ্কট দাঁড়িয়ে গেছে; এই সঙ্কট থেকে আমরা কীভাবে বেরিয়ে আসবো, মানুষের ভোটাধিকার আমরা কীভাবে নিশ্চিত করবো- আসুন এসব নিয়ে আমরা আলোচনা করি।