শিরোনাম
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে শনিবার (২৫ জুন)। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অংশ নেবেন বিরাট জনসভায়। তার আগমন ও জনসভাকে ঘিরে মাদারীপুরে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
জনসভা মঞ্চের প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে প্রশাসন। এ উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরেই আওয়ামী লীগের নেতারা জেলা ও উপজেলা থেকে ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পাশাপাশি মাঠ প্রস্তুতের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ১০ লাখেরও বেশি লোক সমাগম করার টার্গেট নিয়ে মাঠে কাজ করেছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রস্তুত রয়েছে জেলা পুলিশ।
এলাকাবাসী ও সভামঞ্চের সংশ্লিষ্টরা জানান, শনিবার সকালে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা রুটের পদ্মা নদীতে নির্মিত পদ্মা সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশরীরে উপস্থিত থেকে সেতুর উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে চলছে সার্বিক প্রস্তুতি। তাকে বরণ করতে দলীয় নেতাকর্মীরা নিরলস কাজ করছেন। দফায় দফায় কেন্দ্রীয় নেতারা সভাস্থল পরিদর্শন করছেন।
শিবচর উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী শামীমা আক্তার জানান, দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষজন সভাস্থলে যাতে সুপেয় পানি পান করতে পারেন সেজন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। জনসভাস্থলে দুটি সাবমারসিবল পাম্পসহ দুটি নলকূপ বসানো হয়েছে। ১২টি উচ্চ জলাধার স্থাপনের মাধ্যমে ৫০০ ট্যাপের মাধ্যমে পাইপে পানি সরবরাহ করা হবে। জনসভাস্থলে ২৫টি ভিআইপি ল্যাট্রিনসহ প্রায় ৫০০ শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শশাংক চন্দ্র ঘোষ জানান, মাদারীপুর স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে তিনটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। এই হাসপাতালে প্রয়োজনে রক্তদানসহ যাবতীয় সমস্যার চিকিৎসা দেওয়া হবে। এরমধ্যে তিনটি হাসপাতালের একটি ২০ শয্যা ও দুটি ১০ শয্যা করা হয়েছে। ওই হাসপাতালে মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, কার্ডিওলজি ও অর্থোপেডিক ও অ্যানেস্থেসিয়াসহ ছয়জন অভিজ্ঞ কনসালটেন্ট থাকবেন।
প্রতিটি হাসপাতালে ১৫ জন চিকিৎসক কাজ করবেন। প্রায় ৫০ জন মেডিকেল অফিসার নিয়োজিত থাকবেন। এর মধ্যে একটি আইসিউ অ্যাম্বুলেন্স থাকবে। পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা থাকবে জনসভাস্থলে। নার্স-চিকিৎসক ২১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন।
শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো সেলিম জানান, পদ্মা সেতুর জন্য নির্মিত হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়েকে সাজানো হয়েছে দলীয় নেত্রীর ব্যানার-পোস্টার দিয়ে। মোড়ে মোড়ে নির্মাণ করা হয়েছে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী ছবির তোরণ। জনসভা মঞ্চের পাশের পদ্মা নদীতে বিভিন্ন রং-বেরঙের নৌকা সাজানো হয়েছে। বর্ণিল বিভিন্ন সাজে সাজানো হয়েছে পুরো জনসভাস্থল। কর্মসূচি সফল করতে দলীয় নেতাকর্মীরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, নিরাপত্তার জন্য ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ১০ লাখেরও বেশি লোক সমাগম হবে। জনসভাস্থল ও তার আশপাশের পুরো এলাকা সিসি ক্যামরার আওতায় নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন জানান, জনসভাস্থল ও আশপাশের এলাকার জন্য মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু রাখার জন্য জনসভাস্থলে অস্থায়ীভাবে দুটি মোবাইল টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। পল্লি বিদ্যুতের পাশাপাশি জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শিবচর উপজেলার কাঠালবাড়ি এলাকার পদ্মা নদীর পাড়েই সভামঞ্চ সাজানোর কাজ চলছে পুরোদমে।
জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, এই জনসভা হবে ৭ মার্চের পরে সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ জনসভা। এই জনসভা ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জনসভা। এই জনসভা আমাদের অহংকারের জনসভা। এই জনসভা প্রেস্টিজের জনসভা।
সূত্র: জাগো নিউজ