শিরোনাম
পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সংসদীয় টিম। এরই মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খানের নেতৃত্বে এ টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন- নুরুল ইসলাম নাহিদ, নাহিম রাজ্জাক ও কাজী নাবিল আহমেদ।
সবকিছু ঠিক থাকলে ১৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওয়ানা হবে আওয়ামী লীগের সংসদীয় এ টিম। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ের ৩/৪টি কমিটির সঙ্গে বসবেন। পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা হবে।
ওই টিমের প্রধান ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, আমাদের দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় আমার নেতৃত্বে একটি সংসদীয় টিম করে দেওয়া হয়েছে। আমরা শিগগির যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবো।
‘আমরা এই সফরে কংগ্রেশনাল ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটির সঙ্গে বসবো। পারস্পরিক সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। এরই মধ্যে কংগ্রেশনাল ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির অ্যাপয়নমেন্ট পাওয়া গেছে। আরও তিনটি অ্যাপয়নমেন্ট করা হবে।’
জানা যায়, এই সফরে আওয়ামী লীগের এই টিম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদারে কাজ করবে। বিশেষ করে, আগামী নির্বাচন উপলক্ষে এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা।
আগামী বছরের শেষ দিকে দেশে জাতীয় নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে কূটনীতিকদের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা এ নিয়ে কথা বলেছেন।
গত ২৪ এপ্রিল রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পক্ষ নেবে না। আমরা শুধু এমন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রত্যাশা করি, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, কে দেশ চালাবে।
এর আগে গত বছরের ২৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক ভোট নিশ্চিতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশের সবগুলো রাজনৈতিক দল অংশ নেবে বলে যুক্তরাজ্য আশা প্রকাশ করছে।
অন্যদিকে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী বিভিন্ন দলও নির্বাচনকেন্দ্রিক নানা মিটিং-সমাবেশ করছে। নির্বাচন নিয়ে নিজেদের অবস্থানের কথাও জানাচ্ছে দলগুলো।
রোববারই (৮ মে) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পরবর্তী নির্বাচন সম্পর্কে আমাদের কথা তো পরিষ্কার, আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ না করলে এবং নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে নির্বাচনের কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না। এ নিয়ে আমরা কোনো কথাই বলতে চাই না। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে আমরা নির্বাচনে তো যাবোই না।
তবে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সরকারও নানামুখী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মোমেন বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের অংশ নেওয়ার মানসিকতা থাকা প্রয়োজন । সে কারণে বিএনপিকেও নির্বাচন অংশ নেওয়া প্রয়োজন। বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করতে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যও চান তিনি।
যদিও দেশ ফিরে তিনি বলেন, সেটি ছিল ‘কথার কথা’। এটি কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব ছিল না।
এদিকে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর ‘গুরুতর মানবাধিকার লংঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ অভিযোগ এনে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এর ছয়জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকেই ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সর্বশেষ সফরেও তিনি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সিনেটরদের র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান।
ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বাংলাদেশ ভারতের সহযোগিতাও চেয়েছে।
সূত্র: জাগো নিউজ