শিরোনাম
রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে তেলসহ নিত্যপণ্যের মজুত গড়ে তোলা,কারসাজি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া, দাম কমানো ও সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার আহ্বান।
তেল নিয়ে কারসাজি ও দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি(সিপিবি) আজ ৭মে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে আজ৭ মে বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকার পল্টন মোড়ে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপকএ এন রাশেদা এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সাবেকসভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেনপ্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাজ্জাদজহির চন্দন, এ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন রেজা, ও লাকী আক্তার ।
সমাবেশে সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, দেশ এবংসরকার আজ লুটেরা ব্যবসায়ীদের হাতে বন্দি। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা দেশ চালাচ্ছে।বর্তমান সরকার এদের রক্ষক, পাহারাদার। তাইতো ঈদের সময় মানুষকে জিম্মি করে, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোজ্যতেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়াল। এই সরকার সিন্ডিকেট মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাদেরই পুরস্কৃত করলো। এই সরকারই এসব কারসাজির মূল হোতা। তিনি ভোজ্যতেল নিয়ে কারসাজি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ওসরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানান।তিনি অবিলম্বে তেলের দাম কমানো ও বিশ্বপরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে দক্ষ ও দুর্নীতিমুক্ত ভাবে তেলসহ নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত গড়ে তোলার দাবি জানান।
তিনি বলেন, দেন দরবার করে লুটেরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিছু পাওয়া যাবে না। বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। সারাদেশেরেশন ব্যবস্থা ও ন্যয্যমূল্যের দোকান চালু করতে হবে। ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।বিশেষ প্রণোদনা দিয়ে দেশে তেলসহ নিত্যপণ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে ও তেলসহ মজুতপণ্যের সুষম বন্টন নিশ্চিত করতে হবে।তিনি বাণিজ্যমন্ত্রীকে পদচ্যুত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অযোগ্য মন্ত্রী আমলা আরকমিশন ভোগীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, সরকারআজ ডবল ব্যার্থ। সাধারণ জনগণের আয় বাড়াতে পারেনি, অথচ বেশি দামে নিত্যপণ্যকিনতে বাধ্য করে লুটেরা ব্যবসায়ীদের পকেট ভারী করছে। সাধারণ মানুষকে আজপ্রয়োজনের তুলনায় কম খেয়ে বাঁচার চেষ্টা করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, তেলেরমূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ যখন দিশেহারা তখন সরকারের মন্ত্রী বলছেন,‘মূল্য বৃদ্ধির প্রশ্নেসরকারের কিছুই করার নেই।’ আমরা এই সমাবেশ থেকে বলি, ‘এই সরকারের আর দরকারনেই। সাধারণ মানুষের পকেট কাটার সরকার আর না।’
তিনি আরও বলেন, দামকমানোরউদ্যোগ না নিলে বামপন্থী অন্যান্য দলকে সাথে নিয়ে হরতাল অবরোধের কর্মসূচিদেওয়া হবে। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, জনগনের সরকার হলে দাম বাড়ানোর আগে সাধারণমানুষ মতামত নিত। এটা না করে ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার প্রথম দিনে ব্যবসায়ীদের সাথেবৈঠক করে অস্বাভাবিক ভাবে তেলের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হলো। এতে প্রমাণ হয় এই সরকারজনগনের না, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের সরকার। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ছিল,বৈষম্যহীন শোষণ মুক্ত সমাজ এই সরকার ওই পথ থেকে সরে যে লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষা করছে।এই লুটেরা দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে, ওই লুটের টাকা তোলার জন্য জনগনের পকেটকাটা হচ্ছে। তিনি আন্দোলনে জনগনকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান।
মিহির ঘোষ বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলে ভোট ও ভাতেরঅধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি বলেন আমরা এক দুঃশাসন পাল্টিয়ে আরেকদুঃশাসন এ আনতে চাই না। আমরা চাই জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে।অধ্যাপক এ এন রাশেদা বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ একা করেনি মুক্তযুদ্ধ ছিলজনগনের যুদ্ধ। জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে বাম গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য গড়ে তুলতেহবে।সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পার্টিকার্যালয়ে এসে শেষ হয়।এসব দাবিতে সিপিবির আহ্বানে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় সমাবেশ বিক্ষোভঅনুষ্ঠিত হয়।