শিরোনাম
নিউমার্কেটে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে ‘স্ট্র্যাটেজিক’ কারণে পুলিশের নিষ্ক্রিয় থাকার বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ার পারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শহীদ, গুম ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের মধ্যে তারেক রহমানের ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল নিউমার্কেটে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে একজনের প্রাণ গেছে। কয়েকজন মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। পুলিশের যে কর্মকর্তারা দায়িত্বে ছিলেন তারা বলেছেন, স্ট্র্যাটেজিক কারণে আমরা নিষ্ক্রিয় ছিলাম। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, সেই স্ট্র্যাটেজিক কারণটা কি দেশে মানুষ নিহত হবে; একটা সমস্যা তৈরি হবে সেটা নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করবে?
ফখরুল বলেন, কোন স্ট্র্যাটেজিক কারণ থাকে যখন বিএনপির ছোটখাটো কর্মসূচিকেও প্রতিরোধ করার জন্য শত শত, হাজার হাজার পুলিশ মুহূর্তের মধ্যে উপস্থিত হয়? গুলি করে বিএনপির মিছিলগুলো স্তব্ধ করো? হত্যা করে বিরোধী দলের বৈধ আন্দোলনকে বন্ধ করতে চাও? এ কথা বলার কোনো অপেক্ষা রাখে না এই সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থ সরকার রাষ্ট্রকে ব্যর্থ করেছে। কোথাও তাদের কোনো প্রাধান্য নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই। সবচেয়ে বড় যে সমস্যা দেখা দিয়েছে কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। পুলিশকে জবাবদিহি করতে হয় না। চুরি-দুর্নীতি করে সেখানে কোনো জবাবদিহি করতে হয় না। এতগুলো দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ পেল, পত্র-পত্রিকায় উঠে এলো, আমরা বললাম; সেগুলোর কোনো ব্যবস্থা তারা গ্রহণ করতে পারেনি কারণ তারাই জড়িত, সরাসরি জড়িত।
যখন তাদের দুর্নীতি উঠে আসছে তখন বিএপির মামলা রিভাইভ করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে শত কোটির নিচে দুর্নীতির খবর পাওয়া যায় না। এটা হলো মিনিমাম।
ফখরুল বলেন, একটি ফ্যাসিস্ট সরকারকে টিকেই থাকতে হয় ভয় দেখিয়ে। তার ক্ষমতায় থাকার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হচ্ছে গোটা সমাজে, গোটা রাষ্ট্রে সে ভীতি-ত্রাসের সঞ্চার করে। সবাই ভয় পাবে এ রকম একটা অবস্থা তৈরি করা হয়। এই ব্যর্থ, অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার সেভাবেই এখন পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে আছে।
তিনি বলেন, আমরা বহুবার বলেছি, গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা কথা বলেছে-আন্দোলন করেছে। অনেকে সুদূর জেনেভায় পর্যন্ত গেছে হিউম্যান রাইটস কমিশনে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা ঠিক সেভাবে কার্যকারী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারিনি। তবে এটা যে বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিচ্ছে তার প্রমাণ হচ্ছে র্যাবকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া। ইউএস হিউম্যান রাইটস রিপোর্টে প্রত্যেকটি ঘটনা পুঙ্খনাপুঙ্খভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে যে কোনো বিচার নেই, সম্পূর্ণভাবে রাজনীতিকরণ হয়েছে সেটার প্রমাণ হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কারাগারে পাঠানো ও সাজা দেওয়া সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক বলে উল্লেখ করা। আজকে এটা প্রমাণিত সত্য বাংলাদেশ গণতন্ত্র নেই। একটা এক নায়কতন্ত্র চলছে এবং একটি অবৈধ সরকার জবর দখল করে ক্ষমতায় বসে আছে। গুম-খুন করে, নির্যাতন করে, মানুষকে কারাগারে পাঠিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে।
সূত্র: দেশ রূপান্তর