শিরোনাম
আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত দল বিএনপি দুর্নীতি নিয়ে কথা বললে দেশের জনগণ হাসে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। তারা দলীয় গঠনতন্ত্র থেকে দুর্নীতিবিরোধী ধারা অপসারণ করে আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে নিজেদের পরিচিত করেছেন।
যাদের শাসনামলে বাংলাদেশকে টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের কলঙ্কতিলক পরতে হয়েছিল, সেই বিএনপি দুর্নীতি নিয়ে কথা বললে দেশের মানুষ শুধুই হাসে।’
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সকালে ওবায়দুল কাদের তার বাসভবনে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি নেতারা দুর্নীতি দমন কমিশনে গিয়ে যে মহড়া দিয়েছেন, তা নিজেদের দুর্নীতি ও ব্যর্থতা আড়ালের অপচেষ্টা মাত্র। কথিত আন্দোলন আর অভ্যুত্থানের রঙিন খোয়াব ভেঙে যাওয়ায় জনগণের নজর এখন ভিন্ন দিকে নিতে চান তারা। কর্মী-সমর্থকদের রোষানল থেকে বাঁচতে তারা দুদকে দুর্নীতির তথ্য দেওয়ার নামে নাটকীয়তার আশ্রয় নিচ্ছেন।’
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের অনেক অপকর্মের তথ্যই সরকারের কাছে আছে। কে কোথায় বৈঠক করছেন, কাকে টাকা দিচ্ছেন, সরকারের বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে উসকানির জন্য দুর্নীতি করে উপার্জিত অর্থ বিনিয়োগও করছেন। সব খবর সরকারের কাছে আছে। এসব অপরাধীরা কেউই ছাড় পাবে না।’
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারেক রহমানের পাচার করা ১২ কোটি টাকা আটক করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১২ সালে সেই টাকা দেশে ফেরত এনেছে। আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে সিঙ্গাপুর সরকার সেদেশে পাচার করা আট কোটি টাকা ফেরত দেয়।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান ও তার ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দিন আল মামুন সিটিএনএ ব্যাংকে ২১ কোটি টাকা পাচার করেন। এফবিআই এ ঘটনা তদন্ত করেছে এবং বাংলাদেশের আদালতে সাক্ষ্যও দিয়েছে। শুধু তাই নয়, মামুনের ব্যাংক হিসাবে লন্ডনের একটি ব্যাংকে প্রায় ছয় কোটি টাকা পাওয়া যায়। বেলজিয়ামে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়ায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। দুবাইয়ে কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের বাড়ির মালিক হয়েছিল জিয়া পরিবার। ভাঙা সুটকেসের গল্প ততদিনে লঞ্চ, টেক্সটাইল মিল, বিদেশে বাড়ি আর ব্যাংক ব্যালেন্সের নিচে চাপা পড়ে গেছে। অথচ তারাই এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলছেন।’
অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা শূন্য সহিষ্ণুতার নীতিতে অটল উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে এর প্রমাণ জনগণ ইতোমধ্যে দেখেছে। দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করছে। সরকারি দলের বিরুদ্ধেও দুদকের কাজ করতে কোনো বাধা ছিল না এবং এখনো নেই।’
শেখ হাসিনার সততা দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজ যারা বড় বড় কথা বলছেন, লোক দেখানো নাটক করছেন, তাদের শাসনামলে নিজ দলের এমপি, মন্ত্রী এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের একটি প্রমাণও তারা দেখাতে পারবেন না। বিএনপির শাসনামল আর দুর্নীতি সমর্থক হয়ে গিয়েছিল।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘সাহস থাকলে আপনাদের গঠনতন্ত্রে দুর্নীতিবিরোধী ৭ ধারা ফিরেয়ে আনুন, যা বাদ দিয়েছিলেন। তাহলে বোঝা যাবে, আপনারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। একদিকে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে, অন্যদিকে কল্পিত অভিযোগ করাকে জনগণ নৈতিকতা বিরোধী বলে মনে করছে।’