শিরোনাম
দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা চেয়েছে বিএনপি। সম্প্রতি দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তার কাছে এই ব্যাখ্যা চায় দলটি।
তার ব্যাখ্যায় হাইকমান্ড সন্তুষ্ট না হলে তাকে বহিষ্কার করা হতে পারে বলে বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে।
এর আগেও একবার দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ ও জমায়েত করায় শওকত মাহমুদকে কারণ দর্শাও নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।
জানতে চাইলে শওকত মাহমুদ বলেন, ‘ব্যাখ্যা তলব করে আমাকে একটি চিঠি দিয়েছে বিএনপি। এজন্য পাঁচদিন সময় বেঁধে দিয়েছে। আমি যেহেতু দল করি, তাই এই বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই চিঠির লিখিত জবাব দেব।’
দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে গত ২৭ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির’ দাবিতে ‘পেশাজীবী সমাজের’ ব্যানারে একটি সমাবেশ হয়। ওই সমাবেশে শওকত মাহমুদসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরের বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করে।
এই সমাবেশে লে. জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর অংশগ্রহণ করে। এ নিয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
ওই বৈঠকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে বৈঠকে কোনো কোনো নেতা শওকত মাহমুদসহ দলের যারা ওইদিনের সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে দল থেকে বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত দিতে মতামত দেন।
দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা বলেন, শওকত মাহমুদ যেহেতু দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন ভাইস চেয়ারম্যান। এ কারণে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার বক্তব্য জানতে চেয়েছেন। সে কারণে সরাসরি বহিষ্কার না করে শওকত মাহমুদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা তার কাছে জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী পাঁচদিনের মধ্যে যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
২০১৯ সাল থেকে বিএনপির বাইরে একটি শক্তি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ‘ব্যর্থ’ আখ্যা দিয়ে এই তৎপরতা শুরু করে বলে বিএনপি নেতারা জানান। বিএনপির কাছে খবর আছে, যা কিছু হচ্ছে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। সেখানে বিএনপিকে চাপে রেখে এই তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত নেতারা ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টের সামনের বিক্ষোভে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানান। পরের বছরের ১৩ ডিসেম্বর ‘সরকারের পতনের’ লক্ষ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ ও জমায়েত করা হয়।
এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকায় ওই সময়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমদ, শওকত মাহমুদকে কারণ দর্শাও নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। অবশ্য গত ২৭ মার্চের সমাবেশে হাফিজউদ্দিন আহমদ ছিলেন না। তবে, শওকত মাহমুদ ছিলেন।
সূত্র: যুগান্তর