শিরোনাম
এবার রমজানে শুধু ইফতারনির্ভর রাজনীতি নয়, পুরোদমে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগেই জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেই লক্ষ্যে রমজানের পুরোটা সময় নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাংগঠনিকভাবে তৎপর থাকার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির।
করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে প্রায় দুই বছর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড এক প্রকার বন্ধ ছিল। তাই এমনিতেই সাংগঠনিক অনেক কাজ অসম্পূর্ণ থেকে গেছে। অধিকাংশ জেলা-উপজেলা কমিটির সম্মেলন হয়নি।
সর্বশেষ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা দ্রুত জেলা ও উপজেলার সম্মেলন শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশের পর তৃণমূলের সম্মেলন কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে। দলের একাধিক উপজেলা কমিটিতে এসেছে নতুন নেতৃত্ব।
সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি একাধিক ইস্যুতে মাঠ গরম করার চেষ্টা করছে। বাম সংগঠনগুলো বাড়িয়েছে তাদের তৎপরতা। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি ভয়ংকর পর্যায়ে চলে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক উন্নয়নের কথা বলা হলেও বেড়েছে লোডশেডিং।
মফস্বলের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। খোদ রাজধানীতেও এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। তাই মানুষ অসন্তুষ্ট। এই অসন্তোষ কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষ যাতে রমজানে কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকবে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, করোনা মহামারির মধ্যে মানুষের জীবন রক্ষার কাজটি সবচেয়ে জরুরি ছিল। এ সময় আমরা অনেককেই হারিয়েছি। বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব এক ভীষণ প্রতিকূল সময় অতিক্রম করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সামনে আমাদের অনেক কাজ। সেই লক্ষ্যে সাংগঠনিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তাই রমজানেও নেতাকর্মীরা সাংগঠনিকভাবে তৎপর থাকবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে পবিত্র রমজান মাসে অধিকাংশ মানুষ ধর্মীয় কাজে ব্যস্ত থাকেন। এজন্য এই মাসে সাংগঠনিক কার্যক্রম সীমিত করা হয়। সহনীয় মাত্রায় সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তবে এবার সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক থাকবে। ইফতার ও দোয়া মাহফিল কার্যক্রমের পাশাপাশি জেলা-উপজেলার কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, আমি ইতোমধ্যে সিলেট বিভাগের কয়েকটি জেলা ও উপজেলার সাংগঠনিক কার্যক্রম শেষ করেছি। রোজার মধ্যে এ কার্যক্রম সীমিত থাকবে। তবে ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে মতবিনিময় এবং বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি জানান, ঈদের পর তার দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক বিভাগ সিলেটের কয়েকটি জেলা-উপজেলায় আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, দুই বছর ইফতারির রাজনীতি বন্ধ থাকায় এবার ঢাকাসহ সারা দেশে জাঁকজমকের সঙ্গে এ আয়োজনের প্রস্তুতি রয়েছে। ঢাকায় পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শাখা, এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো ইফতারির আয়োজন করবে। এ আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য থাকবে শো-ডাউন। প্রতিপক্ষ বিএনপি যাতে মাঠের দখল নিতে না পারে সেজন্য সতর্ক আওয়ামী লীগ।
সূত্র: যুগান্তর