শিরোনাম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বিএনপির চরম ব্যর্থতার লজ্জাজনক অধ্যায় দেশবাসীর স্মৃতির মানসপট থেকে আজও মুছে যায়নি।
সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতির ভয়াবহ পরিস্থিতি দেশবাসী এখনো ভুলে যায়নি। উত্তরবঙ্গে মঙ্গায় না খেয়ে মানুষের মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার দুর্বিষহ কষ্টের কথাও চোখে ভাসে। তাদের (বিএনপির) শাসনামলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছিল।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা লাগাতার মিথ্যাচার ও অপপ্রচারে লিপ্ত অভিযোগ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) দেওয়া এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আশা করি, বাজারে এ সংকট থাকবে না এবং অল্প সময়ের মধ্যেই দ্রব্যমূল্য পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবো। একই সঙ্গে বিএনপিকে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য ও অপপ্রচার থেকে বিরত থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগের চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার জনগণের সরকার। জনগণই আওয়ামী লীগের একমাত্র শক্তির উৎস। বর্তমান সরকার জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর এবং জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দিয়েই সরকার সব পরিকল্পনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইতোমধ্যে আমদানিপর্যায়ে তেল, চিনিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় ভোজ্যতেলের বর্তমান মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে এবং কেউ অতিরিক্ত দাম রাখলে ১৬১২১ নম্বরে কল করে অভিযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অসাধু, মুনাফাখোর মজুতদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে হাজার হাজার টন ভোজ্যতেল উদ্ধার হচ্ছে।’
কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা প্রায় এক দশক ধরে তথাকথিত গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত করার নামে সরকার পতনের কথা বলে আসছে। তারা ২০০১-২০০৬ সালের মতো আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ভয়ঙ্কর পরিণতির হুমকি দিচ্ছে। ফখরুল সাহেবের এসব হাঁকডাক ও ফাঁকা আওয়াজ মিথ্যাবাদী রাখাল ও বাঘের শিশুতোষ গল্পের কাহিনী ছাড়া আর কিছুই না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলার জনগণ তাদের দূরভিসন্ধিমূলক ফাঁকা আওয়াজে বিভ্রান্ত হয় না, কোনো দিন হবেও না। সরকার পতনের চক্রান্ত বাস্তবায়নে তারা দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গণে দেশবিরোধী ও জনগণের স্বার্থ পরিপন্থী নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকায় দেশের জনগণ তাদেরকে চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। স্বৈরশাসন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও যুদ্ধাপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতা, হাওয়া ভবন-খোয়াব ভবন খুলে প্রশাসনের সর্বস্তরে ও আর্থ-সামাজিক সবখাতে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান, জিয়া পরিবারের বিদেশে অর্থপাচার, এতিমের টাকা আত্মসাৎ, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, সিরিজ বোমা হামলা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, হত্যা-ক্যু-ধর্ষণের রাজত্ব কায়েম, ধ্বংসাত্মক রাজনীতি ও অগ্নিসন্ত্রাসের কারণে বিএনপির বিরুদ্ধে জনগণ ব্যালট রায়ের মাধ্যমে বার বার নীরব অভ্যুত্থান সংঘটিত করেছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি নেতারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা বলছেন। আমরা আগেই বলেছি, দুই বছরের বেশি সময় বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ভয়াবহ বিস্তারের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানির স্বাভাবিক গতি ব্যহত হয়েছে। বেশ কিছু আমদানিনির্ভর দ্রব্যের সংশ্লিষ্ট দেশে উৎপাদন কম হয়েছে এবং করোনার অভিঘাত কাটতে না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গণের নানা টানাপোড়েন ও নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্ববাজারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। অন্যান্য দেশের মতো যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের বাজারেও।’
সূত্র: জাগো নিউজ