শিরোনাম
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগের নারকীয় তাণ্ডব অব্যাহত আছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন। ঢাকা ও লক্ষ্মীপুরে হামলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে ৩৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘আজ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডাররা তাণ্ডব চালিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করেছে। ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের সময় ঢাকা মহানগরীর উত্তর বিএনপির বিমানবন্দর থানার সাংগঠনিক ওয়ার্ড, দক্ষিণখান থানা, ৪৭ ৪৯ নং ওয়ার্ড শাহআলী থানার ৮ নং ওয়ার্ড ও ৯৩ আঞ্চলিক ওয়ার্ড রূপনগর থানার ৯২নং ওয়ার্ডের প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের ওপর পেছনদিক থেকে আওয়ামী ছাত্রলীগ, যুবলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা আক্রমণ করে। এতে রহিম ও আলাউদ্দিনসহ ২০ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হয়।’
তিনি বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের স্থানীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের সময় আওয়ামী যুবলীগের সন্ত্রাসীরা অস্ত্রে-সস্ত্রে সুসজ্জিত একটি গ্রুপ হামলা চালায়। এতে আহত হয়েছেন ছাত্রদল সভাপতি শাহরিয়ার ফয়সাল, পৌরসভা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুলসহ ১৫ জনের অধিক নেতাকর্মী। আহত নেতাকর্মীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে সেখানেও আওয়ামী ক্যাডাররা হামলা চালায়। তাৎক্ষণিক তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।’
গতকাল রবিবার বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোটেক বিলকিস জাহান শিরিন এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নুর উপস্থিতিতে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সম্মেলন চলাকালীন পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে হামলা চালিয়ে স্থানীয় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও অনুষ্ঠান পণ্ড করে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী সরকার ‘জয়বাংলা-ফ্যাসিবাদ’ প্রতিষ্ঠায় সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। ভাষা শহীদ দিবসেও তাদের নারকীয় তাণ্ডব অব্যাহত আছে। আওয়ামী সহিংসতার কীর্তি পত্রিকার প্রথম পাতা জুড়ে প্রকাশ পেলেও নিশিরাতের সরকার ভ্রুক্ষেপহীন। ‘ননসেন্স বক্তৃতায়’ অপরাজেয় আওয়ামী মন্ত্রী ও নেতাদের আশকারাতেই জাতীয় পর্যায় থেকে জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগ নামধারী রক্তপিপাসু দল সৃষ্টি করা হয়েছে। গোটা জাতিকে নিষ্প্রাণ নিস্তেজ করার জন্যই এই সকল দানবদের তৈরি করা হয়েছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই দিনেও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা রক্ত ঝরাতে দ্বিধা করল না। এরা গণতন্ত্রকামী জনগণকে দাবিয়ে রাখার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে যথেচ্ছাচার ব্যবহার করছে। বিশ্বে স্বৈরাচারের অতীতের সমস্ত নজির ভেঙে গোটা দেশকে ‘জয়বাংলা-ফ্যাসিবাদের’ আস্তানা বানাতে তারা গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার রাজনৈতিক দল বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য বিএনপির উপর প্রাণঘাতি আক্রমণ চালাচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই নাৎসী সরকারের উৎখাতই এখন আমাদের প্রধান কর্তব্য। জনগণের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে অবিলম্বে এই সরকারের পতন না ঘটাতে পারলে মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা ভয়াবহভাবে বিপন্ন হবে।’
সূত্র: কালেরকণ্ঠ