শিরোনাম
অপসারণের পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন। যে কোনো সময় গুম হয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমের সঙ্গে এক ফোনালাপে এ আশঙ্কার কথা জানান সদ্য চাকরিচ্যুত শরীফ উদ্দিন। তিনি একটি অজ্ঞাত জায়গা থেকে কথা বলছিলেন।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুদকের পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহর সই করা এক প্রজ্ঞাপনে তাকে এ অপসারণের কথা জানানো হয়। এর আগে গত বছরের জুনে তাকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার চাকরিচ্যুত দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘আমার চাকরিজীবনের সাত বছরেরও বেশি সময় চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার এলাকায় চাকরি করেছি। সে সময় আমি অনেক বড় বড় ব্যক্তির বিরুদ্ধে কাজ করেছি। বিশেষ করে চট্টগ্রামে জমি অধিগ্রহণে অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ১৫৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দিয়েছি। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেওয়ার বিষয়ে ২০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দিয়েছি। চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম নিয়ে কাজ করেছি।’
‘পেট্রোবাংলার একটি প্রকল্পের অনিয়ম নিয়ে কাজ করতে গিয়ে পেট্রোবাংলার ডিরেক্টর (প্ল্যানিং) আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিয়েছি। এ কারণে গত ৩০ জানুয়ারি (আইয়ুব খান) আমার বাসায় এসে আমাকে এক সপ্তাহের মধ্যে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার হুমকি দেন। এ ঘটনা আমি অধিদপ্তরকে অবহিত করিছিলাম। তবে এক সপ্তাহ নয়, তার একটু বেশি সময় লেগেছে। ১৬ দিনের মাথায় আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলো।’
এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর আগে আমাকে কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়নি। এখন আমি অজ্ঞাত স্থানে আছি। যেকোনো সময় গুম হয়ে যেতে পারি।’
শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের নির্দেশ দিয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪(২)-তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মো. শরীফ উদ্দিন, উপ-সহকারী পরিচালক, দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যক্রম, পটুয়াখালীকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো।’ প্রজ্ঞাপনে অপসারণের কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
তবে চাকরিবিধি মেনে ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি রক্ষায় দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
এদিকে দুদক কর্মচারী আইন ৫৪(২) ধারাকে ‘কালো আইন’ দাবি করে এটি বাতিল চেয়েছেন দুদকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সেই সঙ্গে শরীফ উদ্দিনকে অসাংবিধানিকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।
শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে আজ দুপুরে পটুয়াখালী দুদক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তারা।
মানববন্ধনে সহকারী পরিচালক মো. আরিফ হোসেন, সহকারী পরিদর্শক কাঞ্চন পদ বিশ্বাস, উপ-সহকারী পরিদর্শক সিকদার মুহম্মদ নুরুন্নবী, উচ্চমান সহকারী মো. নুর হোসেন গাজীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: জাগো নিউজ