শিরোনাম
২০১০ সালে ভিক্ষুক পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করে সরকার। সিদ্ধান্ত হয়, প্রথমে রাজধানী ঢাকা হবে ভিক্ষুকমুক্ত। সেটা ২০১৩ সালের কথা। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে নির্বাচন করা হয় ঢাকার সাত এলাকা। এরপর কেটে গেছে নয় বছর। তবে ঢাকা শহর দূরে থাক, নির্ধারিত সাত এলাকাও এখনো ভিক্ষুকমুক্ত হয়নি। গোটা শহরের হিসাব ধরলে ভিক্ষুক বেড়েছে আগের চেয়ে কয়েকগুণ। মাঝে মধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ধরলেও রয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র সংকট। দু’চারজনকে অন্য পেশায় ফেরালেও কৌশলে তারা আবার ফিরছেন ভিক্ষাবৃত্তিতে।
ঢাকাসহ সারাদেশে ভিক্ষুক পুনর্বাসনে কাজ করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদপ্তর। তাদের বক্তব্য, বহু পুরোনো জরাজীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। সমাজসেবা বিভাগের রয়েছে জনবল সংকট। ভিক্ষাবৃত্তিকেন্দ্রিক চক্র, অপ্রতুল বরাদ্দ, সচেতনতার অভাব ও সমন্বয়হীনতার কারণেই মূলত ভিক্ষুকমুক্ত করা যাচ্ছে না। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সম্প্রতি রাজধানীতে ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়লেও পরিস্থিতি বিবেচনায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখানো হচ্ছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, প্রকৃতপক্ষে দেশে ভিক্ষুকের কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে ধারণা করা হয় সারাদেশে আড়াই লাখের মতো ভিক্ষুক আছে।
২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি সচিবালয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবেশপথের পূর্ব পাশের চৌরাস্তা, বিমানবন্দর পুলিশ ফাঁড়ি ও এর আশপাশের এলাকা, হোটেল রেডিসন সংলগ্ন এলাকা, ভিআইপি রোড, বেইলি রোড, হোটেল সোনারগাঁও, হোটেল রূপসী বাংলা (বর্তমানে ইন্টারকন্টিনেন্টাল) সংলগ্ন এলাকা এবং কূটনৈতিক জোনকে ভিক্ষুকমুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তখন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন প্রমোদ মানকিন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ভিক্ষুকমুক্ত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পুনর্বাসনের জন্য বিপুল সংখ্যক ভিক্ষুককে আটক করা হলেও ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা না থাকায় তাদের ছেড়ে দিতে হয়। চলতি অর্থবছর মাত্র ১৪০ জন ভিক্ষুককে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সমাজসেবা অধিদপ্তরের রয়েছে জনবল সংকট।
তাদের বক্তব্য, অনেকে ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা কিংবা জীবিকার জন্য উপকরণ কিনে দিলেও তা বিক্রি করে তারা ফের ভিক্ষাবৃত্তিতে ফিরে আসেন। এছাড়া ভিক্ষাবৃত্তিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন চক্র। এরা ভিক্ষাকে বাণিজ্যের অনুষঙ্গ বানিয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থান থেকে ভিক্ষুকদের আটক করা হলে এই চক্রের সদস্যরা তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে ফের ভিক্ষায় নামিয়ে দেয়। ভিক্ষা থেকে প্রাপ্ত অর্থের একটি অংশ এসব চক্রের পকেটে চলে যায়।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশকে ভিক্ষুকমুক্ত করা সম্ভব নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদারকি বাড়াতে হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোরও ভূমিকা আছে। জেলা প্রশাসকদেরও সক্রিয় ভূমিকা লাগবে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহফুজা আখতার বলেন, ‘ভিক্ষুক পুনর্বাসনে বরাদ্দ আগের অর্থবছর পাঁচ কোটি টাকা থাকলেও চলতি অর্থবছর ছয় কোটি টাকা করা হয়েছে। আমরা ডিসিদের মাধ্যমে পুনর্বাসন কার্যক্রম করি। দেখা যায়, আমরা কোনো ভিক্ষুককে প্রশিক্ষণ দিয়ে একটা উপকরণ যেমন- ঠেলাগাড়ি কিংবা রিকশা দিয়ে পুনর্বাসন করলাম। তিনি এটি বিক্রি করে কিংবা কোনো আত্মীয়কে দিয়ে ঢাকায় এসে আবার ভিক্ষা করেন।’
‘ভিক্ষুকমুক্ত করার কাজটি আসলে সমন্বিত কার্যক্রম। এটার সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন সম্পৃক্ত। হয়তো আমরা লিড নিচ্ছি, কিন্তু শুধু সমাজসেবার একার কাজ এটা নয়।’
ভিক্ষাবৃত্তি নির্মূলে ‘ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান নীতিমালা-২০১৮’ করা হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘যেখানে সুনির্দিষ্টভাবে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন করে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে উপজেলা/জেলা/বিভাগীয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটি, পৌরসভা কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটি, সিটি করপোরেশন অঞ্চলভিত্তিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটি, বিভাগীয় ও জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করে এ কমিটিগুলোর নির্দিষ্ট কার্যক্রম/কর্মপরিধি নির্ধারণ করা আছে।’
‘ভিক্ষুকের সংখ্যা ঢাকা শহরে তুলনামূলক বেশি বিবেচনায় উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি পরিচালনা, প্রচার, পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ভিক্ষুক পুনর্বাসন করে তাদের বিভিন্ন অনুদান ও সহায়ক উপকরণ দেওয়া হয়। কর্মসংস্থান, দক্ষ ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং প্রয়োজনে আবাসনের ব্যবস্থা করে ঢাকা শহরকে ভিক্ষুকমুক্ত করার কাজ চলছে। আমরা অন্য স্টেকহোল্ডারদের সহায়তা চেয়ে চিঠি দিয়েছি। আমাদের ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রের একটি পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। এগুলো অনেক পুরোনো বাড়িতে করা হয়েছে।’
ভিক্ষুক পুনর্বাসের ক্ষেত্রে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মাহফুজা আখতার বলেন, ‘স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর চত্বরে অস্থায়ীভিত্তিতে শেড করে সেখানে ভিক্ষুকদের রাখা হবে। অপরদিকে ডিপিপি করে স্থায়ী ভবন নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রণয়ন করা হচ্ছে। মানুষ যাতে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে ফিরে আসে, সে বিষয়ে কাউন্সিলিংটাও আমরা জোরদার করবো। তবে সমন্বিত প্রয়াস দরকার। যার যার অংশের কাজটা তাকে করতে হবে।’
কাজ চলছে বললেও সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভিক্ষুকের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন প্রবেশপথে, রিকশা বা বাসস্ট্যান্ড, বাসের ভিতরে ব্যাপকহারে বেড়েছে ভিক্ষুক। ফুটওভারব্রিজগুলোতেও ব্যাপক সংখ্যক ভিক্ষুকের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। কার্যত কোথাও ভিক্ষুক কমেছে এমনটি দেখা যায় না।
চলতি বছর ভিক্ষুক পুনর্বাসনে ৬৪ জেলার জন্য ছয় কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এর আগের অর্থবছর বরাদ্দ ছিল পাঁচ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশের ৫৮টি জেলা থেকে জেলা প্রশাসক ও সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালকদের যৌথ স্বাক্ষরিত চাহিদাপত্রে ২ লাখ ৩ হাজার ৫২৮ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসনের জন্য ৪২২ কোটি ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়। ওই বছর বরাদ্দ পাওয়া যায় তিন কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। পরের বছর বরাদ্দ ছিল (২০১৯-২০) ৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। ভিক্ষুক পুনর্বাসনে এই বরাদ্দ অত্যন্ত অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচির জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর ভিত্তিতে ভিক্ষুকমুক্ত করতে সহায়তা চেয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
২০১৮ সালের আগস্ট মাসে ‘ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান নীতিমালা’ প্রস্তুত করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত (কার্যক্রম) সচিব মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন যারা দরিদ্র, কষ্টে আছে তাদের যাতে আমরা পুনর্বাসন করি। ভিক্ষুকদের মধ্যে অনেকে আছেন প্রকৃতই গরিব মানুষ। আরেকটা হচ্ছে প্রফেশনাল ভিক্ষাবৃত্তি। আমরা ভিক্ষুকদের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছি। সেখানে থেকে তাদের বাড়িতে পুনর্বাসন করছি। আশ্রয়ণের ঘর হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের সেখানে ঘরের ব্যবস্থা করা হবে। তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মোবাইল কোর্ট করা হচ্ছে, প্রতিদিনই ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এখন করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি থাকায় আমরা বিষয়টি সফটলি (নমনীয়ভাবে) করছি। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো সংস্কার করছি। সেখানে টিনশেড ঘরে ভিক্ষুকদের থাকার ব্যবস্থা করবো।’
সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা অধিশাখার উপ-পরিচালক (বেদে, অনগ্রসর ও হিজড়া জনগোষ্ঠী) মো. শাহ জাহান বলেন, ‘ভিক্ষুকদের ভিক্ষাবৃত্তি থেকে নিবৃত করতে আমরা প্রায় প্রতিদিনিই মোবাইল কোর্ট চালাচ্ছি ঢাকার বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু আশ্রয়কেন্দ্রে স্থান অপ্রতুল হওয়ায় আমরা সমস্যায় পড়ছি। সেজন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর ফাঁকা জায়গায় শেড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। সারাদিন মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ভিক্ষুকদের আটক করলেও রাখার জায়গা নেই। তাই এখন আমরা আশ্রয়কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি বাড়ানোর চেষ্টা করছি। ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের জন্য সব জেলায় টাকা পাঠানো হচ্ছে, ভিক্ষুকরা যাতে যার যার এলাকায় গিয়ে পুনর্বাসিত হতে পারে।’
‘হাত পাতার অভ্যাস হয়ে গেলে আত্মসম্মান আর কাজ করে না। কাজ করার ইচ্ছা থাকে না। তাদের যদি ছয় মাস প্রশিক্ষণের মধ্যে রাখা যায় তাহলে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়। স্বভাব পরিবর্তন হয়। আমরা যাতে বিভিন্ন স্থান থেকে আনা ভিক্ষুকদের বেশিদিন রাখতে পারি, ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিতে পারি সেজন্য সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নড়াইলে একজন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করা হয়েছে। আমাদের মাত্র দুই হাজার ৭শ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি জন্মান্ধ। জন্ম থেকে একটি স্থানে বসে ভিক্ষা করছিলেন। তাকে আমরা একটি চানাচুর, বাদাম বিক্রি করার দোকান করে দিয়েছি। এটা করেই তিনি স্বাবলম্বী।’
সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, ময়মনসিংহের ত্রিশালের ধলা, গাজীপুর পুবাইল, নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল, গাজীপুরের কাশিমপুর, মানিকগঞ্জের বেতিলা ও ঢাকার মিরপুরে আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় ২০১৭ সাল থেকে মানিকগঞ্জের আশ্রয়কেন্দ্রটি ব্যবহৃত হচ্ছে না। এই ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রে এক হাজার ৯শ জনের আসন থাকলেও এখন রয়েছেন ৮শ জনের মতো।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের সূত্রমতে, চলতি অর্থবছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ২৮টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। এতে মাত্র ১৪০ জন ভিক্ষুককে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। এসব মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে প্রায় ১৫শ জন ভিক্ষুক আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্থান সংকুলান না হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া যায়নি। ‘আর ভিক্ষা করবে না’ বলে প্রত্যয়ন নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। চলতি অর্থবছর বিভিন্ন জেলায় আয়বর্ধকমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার সংখ্যা প্রায় এক হাজার ৫শ জন। তবে এর বেশিরভাগই আবার ভিক্ষাবৃত্তিতে ফিরে গেছেন।
গত ৪ জানুয়ারি ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচির জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সভা হয়। ওই সভায় নেতৃত্ব দেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মদ। এতে জানানো হয়, দরিদ্রতা, নদীভাঙন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ-বালাই, প্রতিবন্ধিতাসহ দুষ্টচক্রের অর্থ লালসা, ভিক্ষাবৃত্তিতে অর্থ উপার্জনের সহজলভ্যতার কারণে দেশের বড় শহরগুলোতে ভিক্ষুকের সংখ্যা বেড়েছে। শহরগুলোর প্রধান প্রধান সড়ক, ফুটপাত, ট্রাফিক সিগন্যাল, বিপণি-বিতান ও বাজার, অফিস চত্বর, মসজিদ ও জনবহুল স্থানে বিভিন্ন বয়সী পুরুষ, নারী ও শিশুদের ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত থাকতে দেখা যায়। এদের মধ্যে একটি বড় অংশ প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও শিশু।
সভার কার্যপত্র থেকে আরও জানা যায়, সভায় ভিক্ষুকমুক্ত হিসেবে ঘোষিত সাতটি এলাকাসহ রাজধানীর ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে নির্মিত হবে টিনশেড ডরমিটরি। থাকবে প্রশিক্ষণ ও দারিদ্র্য বিমোচন সংশ্লিষ্ট ঋণের ব্যবস্থা।
২০১৯ সালের জেলা প্রশাসক সম্মেলনের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে শিগগির আটটি বিভাগীয় পর্যায়ে ভিক্ষুক পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণে উপযোগিতা নির্ধারণে প্রয়োজনীয় সমীক্ষা ও সমীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
সূত্র: জাগো নিউজ