শিরোনাম
‘মেঘ’-এর অনেক অশ্রু ঝরেছে। তার অশ্রু মুছে দিতে আর কখনই ফিরবেন না বাবা-মা। এরই মধ্যে এক দশক পার হয়ে গেছে। মাহির সরোয়ার মেঘ সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনী হত্যার বিচার পায়নি আজও।
শিশুকালেই পৃথিবীর রূঢ়তম রূপ দেখা মেঘ কৈশোরে পা রেখেছে। অশ্রু শুকিয়ে গেছে, বাবা-মার জন্য স্বপ্ন মেঘের দুই চোখে। স্বপ্ন ছোঁয়ার পথে মেঘ। ভবিষ্যতে পেস বোলিং অলরাউন্ডার হতে চায়। তার প্রিয় ক্রিকেটার জেমি অ্যান্ডারসন।
বিসিবির ইয়াং টাইগার্স অনূর্ধ্ব-১৬ আঞ্চলিক পর্যায়ের টুর্নামেন্টে পঞ্চগড় অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে খেলতে সিরাজগঞ্জ গেছে মেঘ। সেখানে প্রথম ম্যাচে তার দল হেরেছে। মেঘও প্রত্যাশামতো পারফরম্যান্স করতে না পারায় হতাশ। জীবনের শুরুটা যার সংগ্রাম করে, সে অল্পতে ভেঙে পড়তে রাজি নয়।
মেঘ জানায়, ‘আমি চাই বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার হতে। সাকিব আল হাসানের মতো। যদিও আমি পেস বোলিং অলরাউন্ডার। অ্যান্ডারসনের সুইং পছন্দ আমার। পছন্দের খেলোয়াড় তিনি।’
সে আরও জানায়, ‘মামা (নওশের আলম রোমান) আমাকে অনেক সাহায্য করেন। পরিবারের সবাই চায় আমি যেন ক্রিকেটার হই।’
মেঘ যখন ক্রিকেট খেলাটা ভালো করে বুঝতে শেখেনি, তখন সাকিব ও উম্মে আহমেদ শিশির তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, ২০১৩ সালে। এরপর মাঝে মাঝে সাকিবের সঙ্গে কথা হতো মেঘের। বেশ কিছুদিন ধরে সেটা হচ্ছে না।
শেখ জামাল একাডেমিতে কোচিং করেন রুবেল আহমেদের কাছে। সেখানে ক্রিকেটার তুষার ইমরানও যুক্ত আছেন। ক্রিকেটার হওয়ার সঙ্গে তার বড় চ্যালেঞ্জ পড়াশোনা নিয়ে। বিটিআই স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেঘ জানায়, ‘আমি ভালোই করছি।’
মেঘের বেশি খেয়াল রাখেন তার মামা নওশের। তিনি বলেন, ‘সারাদিন পড়াশোনা ও ক্রিকেট নিয়েই থাকে সে। অনেক পরিশ্রম করে। ইচ্ছা ক্রিকেটার হওয়ার। খেলাধুলার প্রতি আলাদা টান। বাড়তি অনুশীলন করে।’
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনী নিজেদের ভাড়া বাসায় খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। সাংবাদিক দম্পতির হত্যার এক দশক পূর্ণ হচ্ছে আজ। বাবা-মাকে আর ফিরে পাবে না মেঘ। আপন আলোয় উজ্জ্বল হলে বাবা-মাকেও ছাড়িয়ে যাবে হয়তো।