শিরোনাম
আরও তিনটি রুটে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ চালুর ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ও বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি শেখ ফজলে নূর তাপস।
গতকাল সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২১তম সভা হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ ঘোষণা দেন ডিএসসিসি মেয়র। এর আগে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত নগর পরিবহন চালু করেছিল ওই কমিটি।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, বাস রুট রেশনালাইজেশনের প্রথম যাত্রাপথ হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ চালু করা হয়েছিল। এটি আমাদের ২১ নম্বর যাত্রাপথ। এটা সবুজ গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত। সেই সবুজ গুচ্ছের ২২, ২৩ ও ২৬ নম্বর যাত্রাপথ আমরা চিহ্নিত করেছি। এই তিন যাত্রাপথে আমরা কার্যক্রম পরিচালিত করবো। এর মধ্যে ২২ নম্বর যাত্রাপথ হিসেবে ঘাটারচর থেকে ভুলতা পর্যন্ত চলবে নগর পরিবহনের বাস। ২৩ নম্বর যাত্রাপথ হিসেবে ঘাটারচর থেকে মেঘনা ঘাট পর্যন্ত। এছাড়া ২৬ নম্বর যাত্রাপথ হচ্ছে ঘাটারচর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত।
নতুন তিন যাত্রাপথ কবে নাগাদ চালু হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, এসব রুটে আরও ভালো সেবা দিতে কী ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে, কী কী অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে, তা জানতে পরামর্শকরা কাজ শুরু করেছেন। আগামী সভায় তারা নতুন যাত্রাপথের প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা কমিটির কাছে জমা দেবেন। পরে আমরা ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করে দ্রুততার সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই কাজটি করতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবো।
সভায় পুরো সবুজ গুচ্ছে নগর পরিবহনের লক্ষ্যমাত্রা জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র বলেন, আমরা এখন আর একটি একটি করে যাত্রাপথ ধরছি না। আমরা একসঙ্গে তিনটি যাত্রাপথ নিয়ে কাজ করছি। তার মানে আমাদের কার্যক্রম আরও বেগবান ও গতিশীল হচ্ছে। এই তিন যাত্রাপথ শেষ হলে পরবর্তী যাত্রাপথ আরও সহজ হয়ে যাবে। এই সবুজ গুচ্ছে আটটি যাত্রাপথ রয়েছে। একটা চালু আছে। বাকি তিনটি চালু হলে অর্ধেক সম্পন্ন হবে। পরবর্তীতে বাকি চারটা যাত্রাপথ শেষ করে সবুজ গুচ্ছ শেষ করা হবে। আমরা আশাবাদী, চলতি বছরই এই কার্যক্রম শেষ করতে পারবো।
যাত্রীসেবা ঢাকা নগর পরিবহনের মূল লক্ষ্য জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, যে কোনো বিনিয়োগে সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু তার লাভ-লোকসান বোঝা যায় না। এখনই এটা নির্ধারণের সময়ও আসেনি। তবে আয় এবং খরচ মোটামুটি সমান। এই তিনটি যাত্রাপথ চালু হলে আরও লাভ হবে। আমাদের মূল বিষয় যাত্রীসেবা, লাভ করা নয়।
চালু হওয়ার রুটে অন্য বাস চলাচল বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, অনুমোদনহীন বাস জব্দ করার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও কঠোর হবো।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম অনলাইন প্লাটফর্মে সংযুক্ত হয়ে সভায় অংশ নেন। চার আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণে সময়বদ্ধ সূচির ওপর গুরুত্বারোপ করে উত্তর সিটির মেয়র বলেন, বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমের সফলতা ও ঢাকার ওপর বাসের চাপ কমা পরস্পর সম্পৃক্ত। সেজন্য আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণে আমাদের সুনির্দিষ্ট সময়সূচি নিয়ে কাজ করতে হবে। এজন্য ডিটিসিএ আগামী সভায় চার আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণে সুনির্দিষ্ট সময়সূচি ও কর্মপরিকল্পনা দাখিল করবে।
সভার শুরুতেই ঢাকার দুই মেয়র ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ পরিচালনায় বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের জোরদার ও দৃশ্যমান ভূমিকা থাকায় ধন্যবাদ প্রকাশ করেন। এ সময় তারা ঢাকা নগর পরিবহন সেবা ফলপ্রসূ ও কার্যকর করার জন্য বিআরটিএ ও পুলিশকে আরও বেশি পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দেন।
সভায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিনসহ কমিটি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।