ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা: জাপানি হান্নানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

ফানাম নিউজ
  ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩:১০

রাজধানীর দক্ষিণখানের আইনুছবাগে রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদকে (৩৯) প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার মামলায় আমিনুল ইসলাম ওরফে জাপানি হান্নান, তার ছেলে ও ভাইসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। সম্প্রতি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) আজিজুল হক মিঞা বিষয়টি জানিয়েছেন।

অভিযোগপত্রে উল্লেখিত অপর আসামিরা হলেন- জাপানি হান্নানের ছেলে মো. ইকরামুল ইসলাম, তার ভাই মো. শফিকুল ইসলাম, মো. আল আমিন, মো. জহিরুল ইসলাম রিপন প্রধান, মো. খোরশেদ আলম, মো. মোশারফ হোসেন, মো. নুরনবী, সবুজ, মো. হাবিবুর রহমান, স্বজল, মো. ধলা মিয়া ও মো. আব্দুল মালেক।

এ ১৩ আসামির মধ্যে সবুজ, হাবিবুর রহমান, স্বজল, ধলা মিয়া পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে৷ এছাড়া নাম-ঠিকানা খুঁজে না পাওয়ায় আসামি শাহাদাত হোসেনসহ অজ্ঞাত ৬/৭ জনকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আমিনুল ইসলাম হান্নান ওরফে জাপানি হান্নানসহ অন্য আসামিরা সংঘবদ্ধ পেশাদার চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী দলের সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে মারপিটসহ চাঁদা আদায় করতো। সৌদি প্রবাসী সোহেল ১৫ বছর আগে রাজধানীর দক্ষিণখানের আইনুছবাগে তিন কাঠা সম্পত্তি কেনেন। এ জমির সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ২১ মার্চ সিমেন্ট, বালি ও ইট নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে জাপানি হান্নানের নেতৃত্বে আসামিরা সিমেন্ট, বালি ও ইট নিয়ে যায়। এরপর ২৪ মার্চ মালামাল নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আসামিরা বলেন, তাদের এলাকায় কাজ করতে হলে অনুমতি নিতে হবে এবং তাদের লোকজনদের এক লাখ টাকা চাঁদা দিয়ে কাজ করতে হবে। তখন হত্যা মামলার বাদীসহ অন্যরা প্রতিবাদ করলে আসামি জাপানি হান্নান প্রকাশ্যে আব্দুর রশিদ ও সোহেলকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুর রশিদকে মৃত ঘোষণা করেন।

এতে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে হান্নানের গাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এরপর হান্নানের বাড়ি জাপানি কটেজ থেকে অস্ত্রসহ হান্নানকে গ্রেফতার করে দক্ষিণখান থানা পুলিশ। পরে পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে হান্নানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

নিহত ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ রাজধানীর আশকোনার পানির পাম্পের পাশে ৪৩৪ নম্বর নিজ বাড়িতে স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে থাকতেন। আগে তিনি গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজের কারখানা পরিচালনা করতেন। পরে সেটি বন্ধ করে বাড়ি ও মার্কেট দেখাশোনা করছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর নিহত আব্দুর রশিদের বড়ভাই হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে জাপানি হান্নানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দক্ষিণখান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় জাপানি হান্নানসহ ৯ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর দুই দফা রিমান্ড শেষে গত বছরের ৩ এপ্রিল জাপানি হান্নানকে কারাগারে পাঠান ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত। বর্তমানে এ হত্যা মামলার ৯ আসামি কারাগারে রয়েছেন।

সূত্র: জাগো নিউজ