শিরোনাম
বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের জন্য পোশাক কেনার মধ্যস্থতা বা বায়িং হাউসের ব্যবসার আড়ালে মাদকের কারবার করার অভিযোগে পুলিশ এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁর নাম মহিবুল ইসলাম (মাসুদ)।
পুলিশের দাবি, এই ব্যবসায়ীর আমন্ত্রণেই তিন কেজি হেরোইন নিয়ে বসতোয়ানা থেকে দুই সপ্তাহের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন সেই দেশের নাগরিক লেসেডি মোলাপিসি। এই নারীকে ২৫ জানুয়ারি ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ব্যবসায়ী মহিবুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয় গত বুধবার।
মহিবুল ইসলাম ও বতসোয়ানার নারী লেসেডি মোলাপিসি আন্তদেশীয় মাদক পাচার চক্রের সদস্য বলে দাবি করে পুলিশ বলছে, বতসোয়ানা, কাতার ও ভারতে এই চক্রের সদস্যরা সক্রিয়।
এই ঘটনায় হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পুলিশ এখন চক্রের বাকি সদস্যদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। লেসেডির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। উল্লেখ্য, বতসোয়ানায় বাংলাদেশের দূতাবাস নেই।
বিমানবন্দর থানায় মাদকের মামলার পর গত সোমবার লেসেডিকে তিন দিনের রিমান্ডে পায় পুলিশ। রিমান্ড শেষে তাঁকে বৃহস্পতিবার কারাগারে পাঠানো হয়। আর ব্যবসায়ী মহিবুল ইসলামকে দুই দিনের রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। রিমান্ড শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয় গতকাল।
মহিবুল ইসলামের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায়। ১৫ বছর ধরে তিনি ঢাকায় থাকেন। পুলিশ জানিয়েছে, উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরে তাঁর বায়িং হাউস মেহরাব ইন্ডাস্ট্রিজের কার্যালয়। তবে তিন মাস ধরে তিনি কার্যালয়ের ভাড়া পরিশোধ করেন না। আর রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে নিজেকে ব্যবসায়ী দাবি করলেও মহিবুল এ-সংক্রান্ত কোনো নথিপত্র দেখাতে পারেননি।
পুলিশ সূত্র আরও জানায়, মহিবুল ইসলাম বতসোয়ানার নারীকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণপত্র পাঠানোর কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি ই-মেইল না করে ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছিলেন।
এদিকে তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকায় নামার পর লেসেডি মোলাপিসির কমলাপুরের একটি আবাসিক হোটেলে যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে তাঁর কাছ থেকে এক ব্যক্তি মাদকের ব্যাগগুলো সংগ্রহ করবেন বলে তাঁকে বলা ছিল। পুলিশ এখন হেরোইনের ব্যাগগুলো যার সংগ্রহ করার কথা ছিল, তাঁকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। বিমানবন্দরে এক ব্যক্তি ওই নারীকে নিতে এসেছিলেন। তাঁকেও শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ বলছে, জিজ্ঞাসাবাদে লেসেডি জানিয়েছেন, বতসোয়ানায় বিভিন্ন জায়গায় হেরোইন তৈরি হয়। ইভান চোকাকো নামের এক ব্যক্তি তাঁকে হেরোইন দিয়ে বাংলাদেশে পাঠান। ঢাকার কমলাপুর ও ফার্মগেটে দুটি হোটেলে তাঁর জন্য দুটি কামরা আগাম বুকিং দিয়ে রাখেন ভারতে থাকা চক্রের এক সদস্য।
জিজ্ঞাসাবাদে লেসেডি নিজেকে বতসোয়ানার এক পুলিশ সুপারের মেয়ে বলে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি আরও দাবি করেছেন, স্থানীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পড়াশোনা করেন তিনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, লেসেডি যেসব তথ্য দিয়েছেন, তা দূতাবাসের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে।
সূত্র: প্রথম আলো