শিরোনাম
বাংলাদেশকে জলবায়ু সহনশীল করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেন, বিশ্বের ৭ম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হওয়ায় বাংলাদেশে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা, জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান এবং মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এর মাধ্যমে অভিযোজন এবং প্রশমন উভয় কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন। পাশাপাশি প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সহায়তা প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে আয়োজিত গ্লোবাল গ্রিন হাব কোরিয়া ২০২৩-এ ‘গ্রিন গ্রোথ ভিশন’ সেশনে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ পরিবেশ, জলবায়ু ও জ্বালানি খাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে চায় জানিয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, পরিবেশবান্ধব সবুজ প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এবং বিশ্বকে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও উন্নত বাসযোগ্য স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য আমরা কোরিয়া সরকার, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল দেশে ব্যাপক কাঠামোগত পরিবর্তন এবং টেকসই পরিবর্তন দরকার। এ জন্য বেসরকারি অর্থায়ন ও ঋণের পরিবর্তে বহুপাক্ষিক উৎস থেকে সরকারি তহবিলকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। উন্নত ও সবুজ প্রযুক্তির সুবিধা সব উন্নয়নশীল দেশকে সরবরাহ করতে হবে। আর্থিকভাবে দুর্বল দেশগুলোর উন্নয়নের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, দেশে টেকসই উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ কম কার্বন সবুজ উন্নয়নের পথ অনুসরণ করছে। আমরা ১২ শতাংশ জনসংখ্যার জন্য বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার জন্য অফ-গ্রিড এলাকায় ৬০ লাখের বেশি সোলার হোম সিস্টেম ইনস্টল করেছি। গ্রামীণ এলাকায় ৪৫ লাখেরও বেশি উন্নত রান্নার চুলা বিতরণ করেছি। পরিবেশ দূষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশ পলুটারস পে প্রিন্সিপল (পিপিপি) ধারণা চালু করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে জলবায়ু সহনশীল করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। এর জন্য বাংলাদেশের হালনাগাদ ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশনে (এনডিসি) নবায়নযোগ্য শক্তি এবং সবুজ হাইড্রোজেন শক্তি, বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রসার, শিল্পে শক্তি দক্ষতা বৃদ্ধি, গৃহস্থালী ও বাণিজ্যিক ভবনে শক্তি দক্ষতার প্রসার, বর্জ্য থেকে শক্তি এবং বর্জ্যপানি পরিশোধনের মতো অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
শাহাব উদ্দিন আরও বলেন, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনায় ২০২২ থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত জ্বালানি নবায়নযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রেক্ষিত পরিকল্পনার কৌশলগত লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে সমন্বিত পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিবেচনার সঙ্গে একটি সবুজ শিল্পায়ন বৃদ্ধির কৌশল গ্রহণ। আমাদের সরকার টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং সম্পদের টেকসই ব্যবহারের জন্য সার্কুলার ইকোনমি চালু করার জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। ভিশন ২০৪১ এ সবুজ ট্যাক্স বা কার্বন মূল্য নির্ধারণকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি হিসেবে বিবেচনা করে। যা শুধুমাত্র জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নিরুৎসাহিত করে না, বরং নবায়নযোগ্য শক্তিতে সবুজ প্রযুক্তি গ্রহণ এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগ উৎসাহিত করে।