ঈদে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত র‌্যাব

ফানাম নিউজ
  ২০ এপ্রিল ২০২৩, ০১:৪৭

ঘরমুখো মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য দেশের প্রতিটি ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, ফেরিঘাট ও গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগম হয় এমন স্থানগুলোতে ‘র‌্যাব সাপোর্ট সেন্টার’ স্থাপন হবে।

ঈদের দু’দিন আগে ও ঈদের পরের দিন পর্যন্ত এসব সাপোর্ট সেন্টারের কার্যক্রম চলবে। সেন্টারগুলোতে জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে মেডিক্যাল টিম, ইফতার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এছাড়া যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে র‌্যাব স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো টিম। প্রস্তুত রয়েছে র‍্যাবের হেলিকপ্টারও। বুধবার (১৯ এপ্রিল) রাতে এসব তথ্য জানান বাহিনীটির লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, সব ধরনের ঝুঁকি পর্যালোচনা করে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর ২০২৩ উপলক্ষে র‌্যাবের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ উৎসবকে সামনে রেখে বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণী বিতানগুলোতে প্রচুর ক্রয়-বিক্রয়, আর্থিক লেনদেন ও জনসমাগম হয়ে থাকে। কিছু অসাধুচক্র এ সুযোগে বেশি দামে পণ্য বিক্রি ও ভেজালযুক্ত খাবার বিক্রি করে থাকে।

ঈদের কয়েকদিন আগ থেকেই প্রতিটি সড়ক, রেল ও নৌ-পথে প্রচুর যাত্রীর সমাগম হয়ে থাকে। তাছাড়া ঈদের নামাজেও অসংখ্য মুসল্লির জমায়েত হয়। অন্যদিকে, অধিকাংশ লোকজন এসময় ছুটিতে থাকায় ঢাকা শহর ফাঁকা হয়ে যায়। ফলে ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির মাত্রা বৃদ্ধিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা থাকে। তাই পবিত্র ঈদুল ফিতর কেন্দ্র করে প্রতি বছরের মতো এবারও র‌্যাব বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।

র‌্যাব সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুমের (কন্ট্রোল রুমের হটলাইন নম্বর: ০১৭৭৭৭২০০২৯) মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হবে।

কমান্ডার মঈন বলেন, ঈদে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব ফোর্সের ব্যাটালিয়নগুলো নিজ নিজ এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করবে ও পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হবে। সারাদেশে র‌্যাবের কন্ট্রোল রুম, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, চেক পোস্ট ও সিসিটিভি মনিটরিংসহ যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় র‌্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ডগ স্কোয়াড ও হেলিকপ্টারগুলো সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হবে।

জাতীয় ঈদগাহসহ গুরুপূর্ণ ঈদগাহগুলোতে ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সঙ্গে থাকবে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরার কাভারেজ। গুরুত্বপূর্ণ শপিং মল, বিপণী বিতানসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে, যাতে সাধারণ মানুষ উৎসব মুখর পরিবেশে ও নিরাপদে ঈদ উদযাপন করতে পারে।

তাছাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, হয়রানি, অজ্ঞান-মলম পার্টি, চাঁদাবাজি ও ছিনতাই প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে অভিযোগকেন্দ্র স্থাপন করা হবে বলেও জানান কমান্ডার মঈন।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই বাস, পিকআপ, লেগুনাচালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট আছে কি না, যাচাই করা হবে। পাশাপাশি টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

যেকোনো নাশকতা-হামলা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক টহল মোতায়েন ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর মাধ্যমে নাশকতাসহ যেকোন ধরণের উদ্ভুত পরিস্থিতি কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। এছাড়াও র‌্যাব স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো টিমকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ভার্চুয়াল জগতে অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ঈদ কেন্দ্র করে যেকোনো জঙ্গি তৎপরতা, গুজব-উসকানিমূলক তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধেও অনলাইনে নজরদারি অব্যাহত রেখেছে র‌্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানস্থল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান থেকে আসা নারীদের উত্ত্যক্ত করা ও যৌন হয়রানি রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ বিভিন্ন উপায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সার্বিক কার্যক্রম সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি করবে র‌্যাব সদর দপ্তর।

সবশেষে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, আগের বছরগুলোর মতো এ বছরও অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে সারাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। এ উপলক্ষে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।