শিরোনাম
অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা (আইসিটি) আইনের প্রয়োগ বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক। শুক্রবার (৩১ মার্চ) এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে ভলকার তুর্ক বলেন, ‘আমি উদ্বিগ্ন যে বাংলাদেশজুড়ে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের গ্রেফতার, হয়রানি ও ভীতি দেখালো এবং অনলাইনে সমালোচকদের কণ্ঠরোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি আবারও কর্তৃপক্ষের প্রতি অবিলম্বে এর প্রয়োগ স্থগিত এবং এ আইনকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে এর বিধানগুলোকে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার আহ্বান জানাচ্ছি। আমার অফিস এরই মধ্যে প্রযুক্তিভাবে এ ধরনের সংশোধনে সহায়তা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
হাইকমিশনারের বিবৃতিতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে দুই হাজারের বেশি মামলা হয়েছে। সর্বশেষ ২৯ মার্চ বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান এর শিকার হয়েছেন। তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাকে আটক করা হয়েছে। সঙ্গে তার ল্যাপটপ, ফোন ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করে নেওয়া হয়েছে। এরপর তার জামিনের আবেদন নাকচ করা হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আরেকটি মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান এবং একজন আলোকচিত্রী সাংবাদিককেও আসামি করা হয়েছে। বাংলাদেশে জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকট সম্পর্কে তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মামলাটি করা হয়েছে। এ ছাড়া ফেসবুক পোস্টে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে গত ফেব্রুয়ারিতে পরিতোষ সরকার নামে এক তরুণকে এ আইনের আওতায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ভলকার টুর্ক বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে ধারাগুলো মানুষের মতপ্রকাশের অধিকার ক্ষুণ্ন করে সেগুলো নিয়ে আমার অফিস ধারাবাহিকভাবে উদ্বেগ জানাচ্ছে। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার এ আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধে সুরক্ষাকবচ রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু যখন গ্রেফতার করা অব্যাহত রয়েছে, তখন তাদের এ প্রতিশ্রুতি যথেষ্ট নয়। খোদ এ আইনকেই যথাযথভাবে ঢেলে সাজানো দরকার।
হাইকমিশনার অভিযুক্তদের মুক্তির লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা পর্যালোচনার জন্য একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় প্যানেল গঠনের আহ্বান জানান।