রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিতে সাহাবুদ্দিনের আইনি বাধা নেই: ইসি আলমগীর

ফানাম নিউজ
  ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:৫৭

মো. সাহাবুদ্দিনের রাষ্ট্রপতির দায়িত্বগ্রহণে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। তিনি বলেন, ‘যেহেতু রাষ্ট্রপতি অলাভজনক পদ, সেজন্য ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের দায়িত্ব নিতে আইনগত কোনো বাধা নেই।’ মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কক্ষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

আইনে আছে যে, দুদক কমিশনাররা লাভজনক কোনো পদে যেতে পারেন না। রাষ্ট্রপতি পদ লাভজনক নাকি লাভজনক নয়, এটি নিয়েও একটি প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে ইসির ব্যাখ্যা কী?

এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি মো. আলমগীর বলেন, ‘দুদকের আইনে বলা আছে, কমিশনাররা লাভজনক পদে যেতে পারবেন না। কিন্তু আপনারা জানবেন যে, নির্বাচন কমিশন যখন এটা করেছে, তখন আইন-কানুন জেনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ যখন রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন তখন এটি নিয়ে কোর্টে একটি মামলা হয়েছিল। কারণ বিচারপতির ক্ষেত্রেও একই আইন যে, উনারা লাভজনক পদে যেতে পারবেন না।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু ওই সময়ে একটি মামলা হয়েছিল এবং ওই মামলায় হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছিলেন। সেখানে বলা আছে, এতে কোনো বাধা নেই এবং সেই আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিলও হয়নি। যেহেতু আমাদের সামনে উচ্চ আদালতের একটি সুনির্দিষ্ট উদাহরণ রয়েছে, রাষ্ট্রপতির পদকে লাভজনক পদ বলা যাবে না। ওই রায়ে বলা আছে, লাভজনক পদ বলতে বোঝাবে, প্রজাতন্ত্রের যারা কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের। এটি স্পষ্ট বলা আছে। এটি উনার (মো. সাহাবুদ্দিন) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হতে উনার আইনগত কোনো বাধা নেই।’

মো. আলমগীর বলেন, ‘একটা জিনিস বুঝতে হবে, লাভজনক পদের বিষয়ে একেবারে স্পষ্টভাবে বলা আছে, লাভজনক পদ বলতে কী বোঝায়, যদিও তালিকা দেওয়া নেই। তবে লাভজনক পদের ক্ষেত্রে বলা আছে, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত এবং কোনো প্রতিষ্ঠানে যদি সরকারের ৫০ শতাংশের অধিক অর্থ থাকে, তাহলে সেই পদে নিয়োগকে বলা হবে লাভজনক পদ। এখানে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী, উনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী না। এগুলো হলো- সাংবিধানিক পদ। যেহেতু সাংবিধানিক পদ তো আর লাভজনক পদের ডেফিনেশনে (সংজ্ঞা) পড়ে না।’

‘আর যেহেতু এটি নিয়ে একটি মামলা হয়েছিল এবং আমাদের আইন যেটা বলে সেটি হলো- হাইকোর্ট বা আপিল বিভাগের যদি কোনো রায় থাকে, সেই রায় আইন হিসেবে গ্রহণ করা হবে। যেহেতু ওখানে রায়ে বলা আছে, বিচারপতি শাহাবুদ্দিনের ক্ষেত্রে উনি যখন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়ার সময় মামলা হয়, তখন এ মামলাটা খারিজ হয়ে গিয়েছিল এবং আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতির পদটি লাভজনক পদ নয়। এটি সাংবিধানিক পদ। অতএব এটি তার জন্য বাধা হবে না’ যোগ করেন ইসি আলমগীর।

আজ রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন। গতকালই তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করে গেজেট করলেন। উনি যদি আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এর মাধ্যমে কি সুযোগটা বন্ধ করে দেওয়া হলো না? এটি কি আইনসিদ্ধ হলো? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এটি অবশ্যই আইনসিদ্ধ। আইনে স্পষ্ট লেখা আছে যে, যদি একাধিক প্রার্থী না থাকে এবং মনোনয়নপত্র বাছাই করার পরে যদি দেখা যায়, উনার মনোনয়নপত্র সঠিক আছে, বৈধ আছে। তাহলে ওইসময় তাকে নির্বাচিত হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দেবেন। এটি আর প্রত্যাহার করার জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই।’