শিরোনাম
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) মাত্র একজনের মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। আর কোনো প্রার্থী না থাকায় তিনিই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হওয়ার পথে এখন বাকি শুধু আনুষ্ঠানিকতা। মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিনই আসলে তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হলেই তিনি হবেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।
এর আগে এদিন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সকালে তাকে নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দপ্তরে যায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি টিম। সেখানে মনোনয়ন ফরম তোলা ও জমাদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
ফলে সবকিছু ঠিক থাকলে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। তিনি বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের উত্তরসূরি হবেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদেরও সদস্য। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী সাহাবুদ্দিন একাধারে আইনজীবী, অধ্যাপক, সাংবাদিক ও বিচারক ছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার তিনি।
৭৫’র পরে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করায় ২০ আগস্ট সামরিক আইনের ৭ ধারায় আটক হয়ে প্রায় তিন বছর কারাগারে কাটিয়েছেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।
তার জন্ম ১৯৪৯ সালে পাবনা শহরের জুবিলি ট্যাঙ্কপাড়ায়। তার বাবা মরহুম শরফুদ্দীন আনসারী এবং মা মোসাম্মৎ খায়রুন্নেছা।
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। ছাত্রাবস্থায় ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। স্বাধীন বাংলা ছাত্রপরিষদের পাবনা জেলার নেতা হিসেবে পাবনায় স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলনকারীদের অন্যতম মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। পাবনা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৭১ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। ১৯৯৫ সালে জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। কর্মজীবনে তিনি সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও জেলা জজ হিসেবে বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। শহীদ বুলবুল কলেজের অধ্যাপকও ছিলেন তিনি।
অধুনালুপ্ত বাংলার বাণী পত্রিকার পাবনা জেলা প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। পাবনা প্রেস ক্লাব ও অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির আজীবন সদস্য এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।