শিরোনাম
নির্বাচনী বছরে নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় জনপ্রতিনিধিদের আরও বেশি সম্পৃক্ততা চান জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। তাঁরা মনে করেন, এসব কর্মকাণ্ডে শুধু প্রশাসন নয়, রাজনীতিকসহ সমাজের সব মানুষকে সম্পৃক্ত করে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে মোকাবিলা করতে হবে।
সামাজিক বিশৃঙ্খলা হতে পারে- এমন ইস্যুতে অপপ্রচার বন্ধ এবং প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়। পাশাপাশি সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের আগাম গোয়েন্দা তথ্য যাতে ডিসিদের সরবরাহ করা হয়, সে বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁরা।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তিন দিনের ডিসি সম্মেলনের প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় ডিসিরা এসব বিষয় তুলে ধরেন।
মুক্ত আলোচনায় বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতি মোকাবিলায় খাদ্য নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রম বাড়ানো, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম, মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকি জোরদার, সার ও অন্য কৃষি উপকরণে সুষ্ঠু বিতরণ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবস্থাপনা, কৃষিজমির অধিক ব্যবহার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের বিষয়গুলো আলোচনায় স্থান পায়।
উন্নয়নমূলক প্রকল্প তদারকিতে মাঠ প্রশাসনের আরও বেশি সম্পৃক্ততা বাড়ানোর প্রস্তাবের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ডিসিরা বলেন, মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন তদারকির অভাবে ঝুলে যাচ্ছে। কাজের মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এসব প্রকল্পে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সমন্বয় করলে ঠিক সময়ে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করেন তাঁরা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নমূলক প্রকল্প তদারকির বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ডিসিদের নির্দেশ দেন।
মুক্ত আলোচনায় বেশিরভাগ ডিসি তাঁদের জেলার উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। আলোচনায় ডিসিদের কর্মপরিধি ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়টি অল্পবিস্তর স্থান পায়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এ সময় ডিসিরা করোনা মোকাবিলায় সরকারের সাফল্য, পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণসহ বড় প্রকল্পগুলোর ভূয়সী প্রশংসা করেন। সেইসঙ্গে ডিসিরা তাঁদের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলায় শেখ রাসেল পার্ক নির্মাণ, বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রতিষ্ঠাসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।
আগেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে কে কোন বিষয়ে কথা বলবেন, তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। তবে কেউ কেউ প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক ধরাবাঁধা ছকের বাইরে এসে জাতীয় ইস্যুতেও তাঁদের মত তুলে ধরেন। সরকারপ্রধান তাঁদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তাঁদের পরামর্শ ও প্রস্তাব যথাযথভাবে বিশ্নেষণ করে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সব ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে ডিসিদের নির্দেশ দেন।