পুলিশের সন্তান মানুষ করায় বড় ভূমিকা মায়ের: ডিএমপি কমিশনার

ফানাম নিউজ
  ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ০২:৫৬

পুলিশের সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা থাকে তার মায়ের বলে মন্তব্য করেছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

তিনি বলেন, পুলিশে যারা চাকরি করেন তারা সবসময় জনগণের সেবা দেওয়ার জন্য, দেশের জন্য ব্যস্ত থাকেন। এজন্য সন্তানের খাওয়া-দাওয়া, পড়াশোনাসহ যত্ন নিতে হয় তার মাকে। তাই এ কৃতিত্ব মায়েদেরই। তারা ২৪ ঘণ্টা সন্তান, সংসার ও স্বামীর জন্য সময় দেন়।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) ‘বাংলাদেশ পুলিশ মেধাবৃত্তি-২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) পরিবারের সন্তানদের মধ্যে এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের এ মেধাবৃত্তি দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে মেধাবী সন্তান ও গর্বিত অভিভাবকদের অভিনন্দন জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ সদস্যের সন্তানরা একাডেমিক পরীক্ষায় মেধার সাক্ষর রেখেছেন, এজন্য আমরা গর্বিত।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভালো ফলাফল করার পাশাপাশি ভালো মানুষ হতে হবে। মানবিক গুণাবলি অর্জন করতে হবে। ভালো ফলাফল করলাম, ভালো চাকরি পেলাম, বিয়েসাদি করে আলাদা থাকলাম, তাহলে কাজ শেষ হলো না। বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মা সন্তানের কাছে ভাত-কাপড় চান না, তারা নিজের সন্তানের একটু হাসি মুখে দুটো মিষ্টি কথা শুনতে চান। নিজের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো বাবা-মা, ভাই-বোন ও আত্মীয়-স্বজন। এ শেকড় কখনো ছিন্ন করা যাবে না। একাডেমিক ভালো ফলাফল করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষিত হয়ে সমাজের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে জনগণের সেবা করতে হবে, দেশের সেবা করতে হবে, বাবা-মায়ের সেবা করতে হবে।

অভিভাবকদের উদ্দেশে খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, সন্তান ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারলো না, এজন্য কোনো প্রকার মানসিক চাপ প্রয়োগ না করে তার চেষ্টা ও সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত মেধার ওপর ছেড়ে দিতে হবে। কেননা এক সময় সেটা বিকশিত হবেই। শুধু খেয়াল রাখতে হবে সন্তান যেন মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়, বখাটেদের সঙ্গে বন্ধুত্ব না করে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ ২ লাখ ১২ হাজার পুলিশ সদস্যের একটি পরিবার। এখানে কেউ ভালো করলে সবাই প্রশংসিত হয় আবার খারাপ করলেও সবার গায়ে লাগে। এজন্য এ বাহিনীর কোনো সদস্য যেন খারাপ কাজে জড়িয়ে না পড়ে সবাইকে সেজন্য সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। সময় ও সুযোগ পেলে নিজ পরিবার ও সন্তানদের সঙ্গে সময় দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে শিক্ষার্থীদের পক্ষে এএসআই খায়রুল কবিরের সন্তান এসএসসিতে সব বিষয়ে এ প্লাস পাওয়া নিশাত কবির শর্মি বক্তব্য দেয়। অভিভাবকদের পক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবাইলোজিতে পড়ুয়া এইচএসসিতে সব বিষয়ে এ প্লাস পাওয়া রিশাত সরকারের বাবা শাহ আলী থানার পুলিশ সদস্য রিয়াজ উদ্দিন অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে বাংলাদেশ পুলিশ পরিবারের মেধাবী ও কৃতী সন্তানদের পড়ালেখায় আরও উদ্বুদ্ধ করতে ২০১৭ সাল থেকে এই মেধাবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। চলতি বছর ডিএমপিতে কর্মরত ২৭১ জন গর্বিত পুলিশ সদস্যের সন্তান বাংলাদেশ পুলিশ মেধাবৃত্তি-২০২১ পেয়েছে। গত ৩ ডিসেম্বর আইজিপি ১৩৩ জনকে মেধাবৃত্তি প্রদান করেন। বাকি ১৩৮ জনকে (এসএসসি-৭৯ ও এইচএসসি-৫৯) ডিএমপি কমিশনার মেধাবৃত্তি প্রদান করলেন।

অনুষ্ঠানে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কশিনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মো. আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।