৭২’র সংবিধান সাম্প্রদায়িকীকরণে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা

ফানাম নিউজ
  ০৬ নভেম্বর ২০২২, ০০:৩১

১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানকে সাম্প্রদায়িকীকরণ করার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

তিনি বলেন, ৭২’র সংবিধানকে জেনারেল জিয়া ও এরশাদ কলঙ্কিত করেছেন। আমরা আশা করেছিলাম, পঞ্চদশ সংশোধনীর আগে তা যেন আগের মতো হয়ে যায়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য তা হয়নি।

শনিবার (৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সংবিধান দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শাহরিয়ার কবির বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ধর্মের নামে গণহত্যা চালানো হয়েছে। এসবের সবটাই হয়েছে ইসলাম ধর্মের নামে। সেই কারণে বঙ্গবন্ধু ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। ধর্মের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্যই রাষ্ট্র ও রাজনীতি থেকে ধর্মকে পৃথক রাখা জরুরি।

সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, আমেরিকার সংবিধান প্রণেতা থমাস জেফারসন কিন্তু সেক্যুলারিজম প্রচার করেছেন। তার সেক্যুলারিজম আর আমাদের সেক্যুলারিজম আলাদা। সেখানে সেক্যুলারিজম অর্থ হচ্ছে, রাষ্ট্র ও ধর্মের মধ্যে একটা দেওয়াল তৈরি করা। কিন্তু আমাদের এখানে কিন্তু তা বলা হয়নি। আমরা বলেছি, রাষ্ট্র সবার ধর্ম যার যার। তার মানে তাদের থেকে আমাদের ভিন্ন। আমাদের এখানে ধর্ম অর্থ ধারণ করা।

তিনি বলেন, সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থেকে তা রেখে দিয়েছে। প্রজাতন্ত্রের সাত অনুচ্ছেদ, রাষ্ট্র পরিচালনার ২৭ অনুচ্ছেদ, মৌলিক অধিকার ও ৫১টি জায়গায় হাত দেওয়া যাবে না। সংশোধন করা যাবে না। কেন করা যাবে না? ১৪২ অনুচ্ছেদে সংবিধানের অন্য সব সংশোধন করা যায়।

নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন, আমাদের জনগণ দুটি জিনিস বোঝে না। একটা সংবিধান বোঝে না, আরেকটা বাজেট বোঝে না। আর সংবিধান না বোঝার ফলে তারা কিছুই জানতে পারে না। যখন এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করেছিল, তখন আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু সেটা বড় আকারে নেয়নি। একবারেই একটা ছোট প্রতিবাদ ছিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধু ৪ নভেম্বর সংসদে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেখানে তিনি চারটি খুঁটির কথা বলেছিলেন। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ। এ চারটি খুঁটি তিনি স্থাপন করেছিলেন এবং বলেছিলেনও।

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, গণফোরামের (একাংশ) নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।