শিরোনাম
হঠাৎ করেই ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আঘাত হানে দেশে। শুরু হয় নিম্নচাপ। এর পরপরই শীতের আভাস দেখা দেয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতের আবহ শুরু হয়েছে। কুয়াশা পড়ছে রাজধানীর আশপাশসহ সব খানেই। এদিকে শীত শুরু হতে না হতেই বাজারে কম্বল, কার্পেটসহ বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড় উঠতে শুরু করেছে। বাজারে এসেছে রং-বেরঙের বাহারি কার্পেট ও পাপোশও। ফুটপাতে শোভা পাচ্ছে ফুলহাতা গেঞ্জি, শীতের মোটা কাপড়, ফুলহাতা শার্ট ও ট্রাউজার। বড়দের পাশাপাশি শিশুদের জন্যও উঠেছে পোশাক।
ঢাকার খুচরা বাজারেও উঠেছে গরম কাপড়। তবে খুচরায় বিক্রি তেমন না হলেও জমজমাট পাইকারি বাজার। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা গরম কাপড় কিনে নিয়ে যেতে প্রতিদিন রাজধানীর বিপণি-বিতান ও পাইকারি বাজারে ভিড় করছেন। চাহিদাপত্র বা বুকিংয়ের মাধ্যমে কেউ কেউ কুরিয়ারে পণ্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বিক্রেতারা বলছেন, রাজধানীতে শীতের কাপড়ের বেচাবিক্রি জমতে আরও সময় লাগবে। দেশের অন্য জেলায় শীত শুরু হওয়ায় পাইকারি থেকে খুচরা বিক্রেতারা গরম কাপড় সংগ্রহ করছেন।
রাজধানীর গুলিস্তান, বঙ্গবাজার, বায়তুল মোকাররম, পল্টন এলাকায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে এবার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন দেশের কম্বল বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে দেশি নরমাল কম্বল বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে, চায়না কম্বল ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে, কোরিয়ান কম্বল ১ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে, ফ্রান্সের কম্বল ২ হাজার ৬০০ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে, স্পেনের কম্বল চার হাজার থেকে ৯ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া শীতকালীন পাপোশ বিক্রি করা হচ্ছে ২৫০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। আর বিভিন্ন রং আর ভিন্ন ভিন্ন দেশের কার্পেট বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ১২ হাজার টাকার মধ্যে।
আদিব স্টোরের বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘পাইকারি বাজারে বিক্রি মোটামুটি ভালোই চলছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে খুচরা বিক্রেতারা বুকিংয়ের মাধ্যমে মাল নিয়ে যাচ্ছেন। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় বিক্রি কিছুটা কম। এসময় অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি ক্রেতা আসে। শীত যেহেতু শুরু হয়েছে তাই দু’একদিনের মধ্যেই বিক্রি ভালোমতো চলবে।’
পল্টন বায়তুল মোকাররম এলাকায় খুচরা কম্বল, শীতের পাপোশ ও কার্পেট বিক্রেতা মানিক বলেন, ‘খুচরায় মাল এসেছে বেশি বিক্রি কম। এখনও জমেনি। এখন ক্রেতা নেই দেখে আমরা কম দামেই বিক্রি করছি। এখন লাভের চেয়ে মাল বিক্রিকে প্রাধান্য দিচ্ছি আমরা।’
রিপন নামে এক বিক্রেতা বলেন, ‘এখন ক্রেতার উপরোক্ত সময় শীতের পোশাক কেনার। ক’দিন বাদেই সব জিনিসের দাম বেড়ে যাবে। এখন বিক্রেতারা মাল কম লাভেই ছেড়ে দিচ্ছেন। এ সুযোগ লুফে নিতে পারেন রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকার ক্রেতারা।’
বঙ্গবাজারে কথা হয় ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে আসা ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা ঢাকা থেকে কম্বলসহ শীতকালীন পোশাক সংগ্রহ করে খুচরা বিক্রি করি। এলাকায় আগেই শীত আসে তাই এখন সংগ্রহ করছি। এখন যতই দিন যাবে গরম কাপড়ের দাম ততই বাড়বে। গত বছরের কিছু মাল ছিল এবার আরও কিছু নিয়ে যাচ্ছি।’
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থেকে গুলিস্তানে মালামাল কিনতে আসা ব্যবসায়ী আক্তার বলেন, ‘আমরা শীতের পোশাক, কম্বল, পাপোশ এলাকায় খুচরা বিক্রি করি। শীতের আগে থেকেই এসব পণ্য বিক্রি হয়। পুরো শীতে এসব পণ্যের চাহিদা বেশি বাড়ে। গত বছরের অবিক্রীত পণ্য এরই মধ্যে বিক্রি করেছি। এখন চাহিদার আলোকে আরও মালামাল সংগ্রহ করলাম।’
গুলিস্তান ও পল্টন এলাকার ফুটপাতগুলোতেও গরম কাপড় (পোশাক) কিনতে ক্রেতাদের বেশ ভিড় দেখা গেছে। বড়দের পাশাপাশি শিশুদের জন্যও পোশাক কিনছেন এখানকার ক্রেতারা। এসব ফুটপাতে ফুলহাতা গেঞ্জি ও শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে, টাওয়ার পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে। ছোটদের গরম কাপড় পাওয়া যাচ্ছে ১২০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে।