শিরোনাম
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি বলেছেন, আমাদের এখন আর স্বাধীনতা এবং ভাষার জন্য রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের পূর্বসূরিরা এ কাজগুলো করে গেছেন। অনেক পূর্বসূরি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় রক্ত ঝরিয়েছেন। এখন আমাদের কাজ- গণতন্ত্রকে আরও সুসংহত করা। এটি করতে হলে তরুণ প্রজন্মকে নৈতিক মূল্যবোধে বলীয়ান হতে হবে। নতুন প্রজন্মকে দক্ষ, যোগ্য ও মানবিক, সংস্কৃতিবান, ইতিহাস সচেতন সুন্দর মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে জেলহত্যা দিবস নিয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় ৪ নেতাকে খন্দকার মোশতাক সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মোশতাকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও তারা তা গ্রহণ করেননি। সমঝোতার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে মৃত্যুকেই আলিঙ্গন করলেন জাতীয় ৪ নেতা। যারা এই নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটিয়েছে, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল, যারা হত্যাকারীদের শুধু পুরস্কারই দেয়নি, তাদের দায়মুক্তি দিয়েছে। আজ তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তাদের মুখে আস্ফালন শুনি, তারা চায় আবার পঁচাত্তরের হাতিয়ার জেগে উঠুক। যেকোনো মূল্যে তাদের প্রতিহত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মশিউর রহমান বলেন, ৩ নভেম্বরের হত্যাকারীরা অনিরাপদ ও শঙ্কাময় বাংলাদেশ তৈরি করতে চেয়েছিল। এদিন একটি শিশুপুত্র অপেক্ষায় ছিল পিতা ফিরবে। পিতা ফিরেছে। কিন্তু লাশ হয়ে। ওই শিশুটির বয়স তখন ছয় বছর। নাম সোহেল তাজ। বাবার লাশ পেয়ে নিজে দাফন করেছে। বাবার লাশ দাফন করে মাকে বলেছে, দাফন করে এসেছি। শিশুপুত্রের জন্য খুনিরা, দেশ বিরোধীরা অনিরাপদ বাংলাদেশ তৈরি করতে চেয়েছে। তারা হত্যাকারী, ষড়যন্ত্রকারী, পিতা হত্যাকারী, বাংলাদেশ হত্যাকারী। ৩ নভেম্বর, ১৫ আগস্ট, ২১ আগস্ট- এসব অভিন্ন যোগসূত্রে গাঁথা। তারা বাংলাদেশবিরোধী অপশক্তি।’
তিনি বলেন, আজও তারা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে মূলত শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানাসহ বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকারকে অনিরাপদ করতে চান। আমাদের সব বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তি দিয়ে, সাংস্কৃতিক জাগরণ দিয়ে, বাংলাদেশবিরোধী অপশক্তিকে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা দিয়ে জ্ঞানের আলোয় মুক্তবুদ্ধির মানুষ তৈরি করবে। বিশ্বজনীন মানবতাবাদী রাষ্ট্র কায়েম করে, বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব প্রতিষ্ঠা করে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত করে একটি জাতি বিনির্মাণই হোক আমাদের প্রত্যয়।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ, গাজীপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় চার নেতার একজন তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি, কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় চার নেতার একজন সৈয়দ নজরুল ইসলামের কন্যা ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি প্রমুখ।