বিদায় বেলায় যা বলে গেলেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার

ফানাম নিউজ
  ২৯ অক্টোবর ২০২২, ২২:৩১

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিদায়ী কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘চাকরি ছিল আমার কাছে এবাদত। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কখনো কোনো কাজে অন্যায় সুবিধা আমি নেইনি।’

শনিবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে’র অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

চাকরির বয়স ৫৯ হওয়ায় আজই (শনিবার) সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাচ্ছেন শফিকুল। ৩ বছরের বেশি সময় ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।অষ্টম ব্যাচের এই কর্মকর্তা ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ডিএমপির ৩৪তম কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তাকে সামনে রেখে ঢাকা পুলিশের বিদায়ী এই কমিশনার বলেন, ‘পুরো চাকরি জীবনে আপনার (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) যে আশীর্বাদ মাথার উপরে ছিল, তা কখনো ভুলব না।চাকরিটাকে এবাদত মনে করেছি, চাকরি জীবনে কোথাও থেকে কোনো অন্যায় সুবিধা গ্রহণ করিনি। একজন সরকারি কর্মকর্তাকে ভালোভাবে চলতে আপনি পেছন থেকে যে সাপোর্ট দিয়েছেন, সেজন্য আপনাকে আলাদাভাবে স্যালুট ও শ্রদ্ধা।’

এ সময় নতুন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের প্রশংসা করেন শফিকুল। তিনি বলেন, ‘আইজিপি হিসেবে যাকে বেছে নিয়েছেন, তিনি ভালো করবেন। এ আস্থা আমার রয়েছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে কতিপয় দুর্বৃত্তের হাতে ছেড়ে দিতে পারি না। যতক্ষণ শ্বাস আছে, যতক্ষণ আশ আছে, ততক্ষণ পুলিশ বাহিনী লড়াই করবে।’

শফিকুল বলেন, আমি ২০১৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার ৫-৬ মাস না যেতেই কোভিড মহামারি শুরু হয়ে যায়। সে সময় বিধি-নিষেধের কারণে স্বাভাবিক সভা-সমাবেশ বন্ধ হয়ে যায়। সেজন্য কমিউনিটি পুলিশিংয়ের জন্য খুব বেশি কাজ করতে পারিনি। তারপরও চেষ্টা করেছি।

বিদায়ী এই পুলিশ কর্মকর্তা তার বক্তব্যে সমাজের কোন কোন অপরাধ দমনে কমিউনিটি পুলিশিং ভূমিকা রাখতে পারে- সে কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে ইভটিজিং, নারী নির্যাতন, যৌতুক, মাদকের মতো সামাজিক সমস্যা রোধে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আগে এসব সামাজিক সমস্যা প্রতিরোধে আলাদা আইন ছিল না। পর্যায়ক্রমে যখন অপরাধ বাড়তে থাকল, আইন হলো।পর্যায়ক্রমে আইন কঠোর থেকে কঠোর হলো। কিন্তু শুধু আইন করে কি অপরাধ নির্মূল সম্ভব হয়েছে? হয়ত কমেছে, কিন্তু খুব বেশি লাভ হয়নি। এসব সামাজিক সমস্যা যদি সবাই মিলে প্রতিরোধ করি, তাহলেই এ অপরাধ থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব।’

সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে শফিকুল ইসলাম বলেন, ভালো কাজের জন্য কারো কাছে জবাবদিহিতা করতে হয় না, জবাবদিহিতা করতে হয় মন্দ কাজের জন্য। আমরা মানুষের ভালো কাজের প্রশংসা করতে জানি না, মানুষের কাজের জন্য কৃতিত্ব দিতে আমরা কুণ্ঠিত বোধ করি। সহকর্মীদের ওপর নিজের বীরত্ব জাহির করিনি। যার যার কাজের জন্য তাকে প্রশংসিত করেছি। আরেকজনের অর্জনকে নিজের অর্জন বলে ছিনিয়ে নেইনি। চাকরি জীবনে কারো জন্য দুঃখ-কষ্টের কারণ হইনি।