শিরোনাম
নানা কর্মসূচিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ সন্তান শহীদ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। এবারের জন্মদিনে প্রতিপাদ্য ছিল ‘শেখ রাসেল নির্মলতার প্রতীক, দুরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক’।
দিনটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টে নিহত সব শহীদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করে আওয়ামী লীগ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
এছাড়া ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। দোয়া-মাহফিলেও অংশ নেন নেতাকর্মীরা।
পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনটিতে নানা কর্মসূচি পালন করে। পরে বনানীর কবরস্থান মসজিদে শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে মিলাদ-মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া ও মিলাদে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
দিবসটি উপলক্ষে বিকেল চারটায় রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভার আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম।
এছাড়া আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য মারুফা আক্তার পপি, শেখ রাসেলের সহপাঠীরা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
শেখ রাসেল স্মরণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। মঙ্গলবার বিকেল তিনটায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
এদিন বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে ছাত্রলীগ। বিকেল ৪টায় শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে এ সংগঠন।
দুরন্ত প্রাণবন্ত শেখ রাসেল বইয়ের মোড়ক উন্মোচন:
এদিকে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে ‘দুরন্ত প্রাণবন্ত শেখ রাসেল’ শীর্ষক স্মারকগ্রন্থ। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মঙ্গলবার সকালে ‘শেখ রাসেল দিবস’-এর উদ্বোধন এবং ‘শেখ রাসেল পদক’ বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন।
গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। শেখ রাসেলের দুরন্ত শৈশবের ঘটনা নিয়ে রচিত গ্রন্থ ‘দুরন্ত প্রাণবন্ত শেখ রাসেল’-এর সম্পাদনা করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। বইটির পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি উপদেষ্টা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের উপদেষ্টা এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শেখ রাসেল সম্পর্কিত সব গ্রন্থনা, প্রকাশনা ও গবেষণায় সহায়তা করছেন ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। এর আগে প্রযুক্তিনির্ভর গুণগত শিক্ষার মানোন্নয়নে সারা দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫ হাজারটি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।
‘শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার’ উদ্বোধন
শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে ‘শেখ রাসেল স্কুল অভ ফিউচার’এর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় সংযুক্ত হয়ে এ ল্যাব উদ্বোধন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুল ইসলাম, শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা। এসময় প্রতিষ্ঠানের সব ছাত্র-ছাত্রীরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে আয়োজনটি উপভোগ করেন।
একই সঙ্গে প্রতিটি সংসদীয় আসনে একটি করে মোট ৩০০টি শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচারেরও উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয় শেখ রাসেলের জীবন নিয়ে নির্মিত ত্রিমাত্রিক অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’-এর ট্রেলার। যার চিত্রনাট্য রচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। এটি শিগগিরই মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
‘শেখ রাসেলের নিষ্পাপ হাসি নির্মমভাবে থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল’
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট কালোরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শহীদ শেখ রাসেলের নিষ্পাপ হাসি নির্মমভাবে থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি বলেন, ওই রাতে বর্বরোচিতভাবে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে শিশু রাসেলকে হত্যা করা হয়। হত্যা করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতাসহ তাদের পরিবারের সবাইকে। একটি নিষ্পাপ, নিরীহ ছোট্ট শিশুর হাসি সেদিন জঘন্য, নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার বনানী কবরস্থানে শহীদ শেখ রাসেলের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তাপস এসব কথা বলেন।
শেখ রাসেল দিবস-২০২২ উপলক্ষে মেয়র হানিফ জামে মসজিদ, গোলাপ শাহ জামে মসজিদসহ করপোরেশন পরিচালিত অন্যান্য মসজিদে আজ বাদ আছর দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে বলেও জানান ডিএসসিসি মেয়র। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. দিলীপ রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার কবির, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এফ এম শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের খাবার বিতরণ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ সন্তান শহীদ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে ডেমরার ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসায় এক আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া, খাবার বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা-৫ আসনের চার বারের প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার জেষ্ঠ্যপুত্র ও ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মশিউর রহমান মোল্লা সজল।
আরও উপস্থিত ছিলেন ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা হানিফ তালুকদার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর আহমেদ বাবু, ডগাইর উত্তর ইউনিটের সভাপতি মাহবুব আলম ফয়সাল, ৬৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি রাসেল ভূঁইয়া সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
বায়তুল মোকাররমে বিশেষ দোয়া
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন ও শেখ রাসেল দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ চত্বরে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মঙ্গলবার বাদ জোহর এ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া সংক্ষিপ্ত আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। এছাড়া অনুষ্ঠানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মো. মুশফিকুর রহমান, পরিচালক মোহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদার, ড. সৈয়দ শাহ এমরান, মো. আনিছুর রহমান সরকার, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন।
দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান।
অন্যদিকে শেখ রাসেলের ৫৯ তম জন্মদিন উপলক্ষে এ দিন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫০টি ইসলামিক মিশন, ৭টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ও মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের গণশিক্ষা কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।