আকবর আলি খানের প্রতি স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের শ্রদ্ধা

ফানাম নিউজ
  ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:১৬

অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খানের গুলশানের বাসায় শ্রদ্ধা ও দোয়া করেছেন আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ গুলশান-১ এর বাসায় নেওয়া হয়। তার আগে সকাল থেকেই অনেকে ভিড় করছিলেন মরদেহের অপেক্ষায়।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টাকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, কবী সোহরাব হোসেন, সাবেক দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান, সরকারি সাবেক বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও তার স্বজনরা।

তবে শ্রদ্ধা জানানোর সময় কোনো প্রকার ফুলের তোড়া নিয়ে আসতে দেখা যায়নি কাউকে।

শ্রদ্ধা জানানো শেষে কবি সোহরাব হোসেন বলেন, আকবর আলি খান তার কাজের মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন। তিনি সব সময় যে সত্য লিখেছেন, সেই লেখনীর মাধ্যমে তিনি বেঁচে থাকবেন।

প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের পানি সম্পদ, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস ও তার নিজের আত্মজীবনীর দ্বিতীয় খণ্ড এই তিনটি বই লেখা ও প্রকাশের কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই আকবর আলি খান চলে গেলেন। তার লেখনির মাধ্যমে জাতি তাকে স্মরণ রাখবে।

আকবর আলি খানের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বলেন, পরিবার ও আত্মীয়দের সঙ্গে তার সম্পর্ক সব সময় ভালো ছিল। দীর্ঘদিন তিনি একা ছিলেন। স্ত্রীকে হারিয়ে বয়স্ক শাশুড়িকে তিনি দেখাশুনা করেছেন।

শুক্রবার বাদ জুমা গুলশান আজাদ মসজিদে আকবর আলি খানের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হবে।

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে মৃত্যুবরণ করেন আকবর আলি খান। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি।

১৯৪৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে জন্মগ্রহণ করেন আকবর আলি খান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

সরকারি চাকরি দিয়ে তার পেশাজীবন শুরু। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আকবর আলি হবিগঞ্জের মহুকুমা প্রশাসক বা এসডিও ছিলেন। সেসময় সক্রিয়ভাবে মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে কাজ করায় তার বিচার করে পাকিস্তান সামরিক সরকার। তারই অনুপস্থিতিতে দেওয়া হয় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড।

স্বাধীনতার পর আবার আমলা হিসেবে পেশাজীবনে প্রবেশ করেন। বাংলাদেশ সরকারের অর্থসচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আকবর আলি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাও ছিলেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করেছেন তিনি।

অর্থনীতি বিষয়ে ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’ এবং ‘আজব ও জবর-আজব অর্থনীতি’ নামে তার দুটি বই বেশ জনপ্রিয়।