স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা: পরীক্ষায় ফেল করানোর অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন

ফানাম নিউজ
  ২৫ আগস্ট ২০২২, ০৮:২০

ঢাকার তেজগাঁওয়ে ১২ তলা ভবন থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করা হলিক্রস স্কুলের ছাত্রী পারমিতা ফাইহাকে পরীক্ষায় ফেল করানোর অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন হয়েছে। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর দুই সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

সম্প্রতি তেজগাঁও রেলস্টেশন রোডের নন্দন রোকেয়া নামে ১২ তলার অ্যাপার্টমেন্টের ছাদ থেকে লাফ দেয় পারমিতা ফাইহা। হলিক্রস স্কুলের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল সে। 

পারমিতার আত্মহত্যার পর সহপাঠীরা অভিযোগ করেন, স্কুলের উচ্চতর গণিতে ফেল করার অপমান সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। পারমিতা নবম শ্রেণির সি শাখায় ফার্স্ট গার্ল ছিল। সি ও ডি শাখায় উচ্চতর গণিতের ক্লাস নেন শোভন রোজারিও নামে এক শিক্ষক। এ বছর প্রথম সাময়িকী পরীক্ষায় উচ্চতর গণিতে সি ও ডি শাখার ১০২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ জন ফেল করে। দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় উচ্চতর গণিতে ৫৫ জন ফেল করে। পারমিতা সি শাখায় ফার্স্ট গার্ল হওয়া সত্ত্বেও প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় উচ্চতর গণিতে ফেল করে।

শিক্ষক শোভন রোজারির কাছে পারমিতা প্রাইভেট পড়তে রাজি হননি বলে তাকে ফেল করিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ সহপাঠীদের। 

পরপর একই বিষয়ে দুবার ফেল করায় স্কুলের অধ্যক্ষ পারমিতার অভিভাবককে বৃহস্পতিবার দেখা করতে বলেন। এ খবর পেয়ে সোমবার থেকে পারমিতা আতংকে ছিল। বাবা-মাকে কী করে ফেল করার বিষয়টি বলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল। উপায় খুঁজতে মঙ্গলবার স্কুলে সহপাঠীদের সঙ্গে আলাপও করে। এরপর বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করে সে।

এ অভিযোগের প্রেক্ষাপটে তদন্ত কমিটি গঠন করে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের পরিচালক অলিউল্লাহ আজমতগীর গণমাধ্যমকে বলেন, এ কমিটি মূলত পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার যে অভিযোগটি উঠেছে, সেটি তদন্ত করবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট উত্তরপত্র জব্দ করে এনে সেগুলো সংশ্লিষ্ট পরীক্ষককে দিয়ে পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। কমিটি আগামী দু–তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে।

তেজগাঁও রেলস্টেশন সড়কের রোকেয়া কানন ভবনের দশম তলার একটি ফ্ল্যাটে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন পারমিতা। তার বাবা মো. মাজেদ একজন ব্যবসায়ী। মায়ের নাম কামরুন নাহার। 

পরিবারের সদস্যরা জানান, মঙ্গলবার পারপিতা স্কুলে থেকে ফিরে এসে বাসায় না গিয়ে লিফটে ভবনের ছাদে চলে যায়। স্কুলের পোশাক পরা অবস্থায় ছাদ থেকে নিচে ঝাঁপ দেয়। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে পান্থপথের স্কয়ার হসপিটালে স্থানান্তর করা হয়। রাত ৮ টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সূত্র: যুগান্তর