শিরোনাম
ভয়াল ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছে।
রোববার (২১ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতেই বিএনপি-জামায়াত তথা চারদলীয় জোট সরকার রাষ্টযন্ত্র ব্যবহার করে নৃশংসতম এই গ্রেনেড হামলা চালায়। যারা গণতন্ত্রের কথা বলে, তাহলে এটা কীসের গণতন্ত্র? একটা প্রকাশ্য জনসভায় কীভাবে আর্জেস গ্রেনেড মারতে পারে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আক্রমণকারীদের রক্ষা করার জন্য সেদিন ভয়াবহতার মধ্যেই পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারগ্যাস ছুড়েছে। সব আলামত সিটি করপোরেশনের গাড়ি দিয়ে ধুয়ে নষ্ট করা হয়েছে। একটা গ্রেনেড অবিস্ফোরিত থেকে যায়, সেটিও সংরক্ষণের কথা বলায় একজন অফিসারকে ধমকানো হয়। পরে তাকে নির্যাতনও করা হয়েছে। সরকারের সহযোগিতা না থাকলে তো এমন হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, এখানে একজন কারারক্ষী জড়িত ছিল। ওইদিন রাতেই খালেদা জিয়া চারজনকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসে করে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ওই কারারক্ষীও ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন এলেই বিএনপির নানান ষড়যন্ত্র শুরু হয়। ২০০১ সালের কিছু সুশীল ও দুটি দেশের দূতাবাস কর্মীরা ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে হারিয়ে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বাবার পথ ধরেই এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করছি। গ্রেনেড, বোমা, বুলেট দিয়ে বারবার হত্যাচেষ্টা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে নেতাকর্মীরা আমাকে বাঁচিয়েছেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমি জানি যে আমরা তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি। বিদ্যুৎ আমরা শতভাগ দিয়েছিলাম। কিন্তু সেটাকে আমাদের সীমিত করতে হয়েছে। আজকে বিশ্বপরিস্থিতি কারণেই আমাদেরকে ধাক্কায় পড়তে হচ্ছে। তারপর আমরা আলাপ আলোচনা চালিয়ে চেষ্টা করছি দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করতে।
সরকার প্রধান বলেন, এই অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে মাত্র ১৫ টাকা কেজিতে ১৫ লাখ মানুষকে আমরা চাল দেব। রেশন কার্ড করে দিচ্ছি। এক কোটি পরিবার এই রেশন কার্ড পাবে। এখান থেকে ন্যায্যমূল্য তারা তাদের পণ্য কিনতে পারবে। অচিরেই আমরা এটার ওপরে ঘোষণা দিতে পারব। আমরা কিন্তু ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমি চাই না আমার দেশের মানুষ কষ্ট পাক।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কারণ রাজনীতি করিইতো তাদের (জনগণ) জন্য। জানি না, আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন বারবার, হয়তো এদেশের কল্যাণের জন্য, এদেশের মানুষের জন্যই। দেশের এমন কোনও অঞ্চল নেই যেখানে সামনাসামনি হয় গুলি, না হয় বোমা, আর না হলে গাড়ি হামলার শিকার না হয়েছি। তারপরও বেঁচে এসেছি, দেশের কাজ করার চেষ্টা করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, একুশের আগস্টে গ্রেনেড হামলায় বেঁচে ফেরাদের নতুন জন্ম হয়েছে। আজকে একুশে আগস্ট। হ্যাঁ, সেদিন আমাদের নতুন জন্ম হয়েছে; যারা সেদিন র্যালিতে ছিলাম। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব জনগণের প্রতি। আর সেই দায়িত্ব যতক্ষণ পর্যন্ত নিশ্বাস আছে, পালন করে যাবো; সেটাই হচ্ছে আজকের প্রতিজ্ঞা।
সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম প্রমুখ। এছাড়াও মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।