শিরোনাম
চলতি বছর কোরবানি ঈদের প্রথম দুই দিনে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ কাঁচা চামড়া সরাসরি সংগ্রহ করেছেন ট্যানারিমালিকেরা। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় দেড় লাখ বেশি। গত বছর ট্যানারিমালিকেরা প্রায় তিন লাখ কাঁচা চামড়া কিনেছিলেন। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ এ তথ্য জানান।
সাধারণত কোরবানির চামড়ার বড় অংশই লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করেন মৌসুমি ব্যবসায়ী ও আড়তদারেরা। পাশাপাশি ট্যানারিমালিকেরাও সরাসরি কিছুসংখ্যক কাঁচা চামড়া কেনেন। তবে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ২০১৭ সালে সাভারের হেমায়েতপুরে ট্যানারি স্থানান্তরের পর থেকে সরাসরি কাঁচা চামড়া কেনা বাড়িয়েছেন ট্যানারিমালিকেরা।
বিটিএ চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, ঈদের দিন রোববার ও পরদিন সোমবার—এই দুই দিনে ট্যানারিমালিকেরা সরাসরি সাড়ে পাঁচ লাখ কাঁচা চামড়া কিনেছেন। আগামী বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার থেকে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের আড়ত ও হাট থেকে লবণযুক্ত চামড়া কেনা শুরু করবেন তাঁরা।
শাহীন আহমেদ আরও বলেন, চলতি মৌসুমে আমাদের প্রায় এক কোটি চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য ছিল। তবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী সারা দেশে এবার কোরবানি হয়েছে ৯৯ লাখ গবাদিপশু। এর মধ্যে খাসি ও বকরির চামড়া রয়েছে। তার একটি অংশ আবার নষ্টও হয়েছে। সে কারণে চলতি মৌসুমে শেষ পর্যন্ত ৯০–৯৫ লাখ চামড়া সংগ্রহ হবে বলে মনে হচ্ছে।
ঈদের দিন গত রোববার দুপুরে রাজধানীর পুরান ঢাকার পোস্তায় ছোট আকারের গরুর চামড়া ২০০–২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাঝারি আকারের গরুর চামড়া মানভেদে ৩০০–৭৫০ টাকা এবং বড় আকারের গরুর চামড়া ৮০০–১,১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে অধিকাংশ আড়তদার ছোট আকারের গরুর চামড়া এবং খাসি ও বকরির চামড়া কিনতে অনীহা দেখান। বিকেলে ছোট আকারের গরুর চামড়া কেউ বিক্রি করতে আনলে ১০০ টাকা দামও বলছেন ব্যবসায়ীরা। আর খাসি ও বকরির চামড়া ১০ টাকার বেশি বিক্রি হয়েছে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকায় গরুর লবণযুক্ত চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪৭ থেকে ৫২ টাকা নির্ধারণ করে। ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। এ ছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ১৮ থেকে ২০ টাকা, বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে ও ঢাকায় বকরি ও খাসির চামড়ার দাম একই রাখা হয়।
ঈদের দিন যে দামে কাঁচা চামড়ার বিক্রি হয়েছে, সেটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত দামের চেয়ে কম কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন করলে শাহীন আহমেদ বলেন, আমার মনে হয় যে দামে কাঁচাচামড়া কেনাবেচা হয়েছে, তা ঠিক আছে। কারণ, একটি চামড়ায় অন্তত সাত–আট কেজি লবণ দিতে হয়। প্রায় ৬০ থেকে ৭০ টাকা শ্রমিক খরচ আছে। এ ছাড়া পরিবহন ও আড়ত খরচ আছে। সব মিলিয়ে প্রতিটি চামড়া সংরক্ষণে ২০০–২৫০ টাকা লাগে। সুতরাং সে হিসাবে চামড়ার দাম ঠিকই ছিল। আবার চামড়ার কিছু অংশ বাদও যায়।
সূত্র: প্রথম আলো